“অহং ও অহঙ্কার”

অমৃত কথা

কোন-কিছুর দ্বারা প্রতিহত হ’লে যা’ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তা-ই অহং (Self) –অহংকে শক্ত করা মানেই অন্যকে না জানা।
অহংকার যত ঘন অজ্ঞানতা তত বেশী — আর অহং যত পাতলা, জ্ঞান তত উজ্জ্বল।
অহঙ্কার থেকেই আসক্তি আসে, আসক্তি থেকে অজ্ঞানতা আসে — আর অজ্ঞানতাই দু:খ।
দেহ থাকতে অহঙ্কার যায় না, আর ভাব থাকতেও অহং যায় না – তবে নিজের অহং আদর্শের উপর দিয়ে Passive হ’য়ে যে যত আদর্শের ইচ্ছাপূরণে actively চলতে পারে, সে তত নিরহঙ্কার এবং সে তত উদার।
অহঙ্কার আসক্তি এনে দেয়, আসক্তি এনে দেয় স্বার্থবুদ্ধি, স্বার্থবুদ্ধি আনে কাম, কাম হতেই ক্রোধের উৎপত্তি আর ক্রোধ থেকেই আসে হিংসা।
যদি ভাল চাও ত’ জ্ঞানাভিমান ছাড়, সবারই কথা শোন, আর যা’ তোমার হৃদয়ের বিস্তারের সাহায্য করে তা-ই কর।
জ্ঞানাভিমান জ্ঞানের যত অন্তরায় — আর কোন রিপু তত নয়।
অহংকে যত দূরে রাখবে, তোমার জ্ঞানের বা দর্শনের পাল্লার তত বিস্তার হবে।
যদি শিক্ষা দিতে চাও, তবে কখনই শিক্ষক হতে চেয়ো না। ‘আমি শিক্ষক’ এই অহঙ্কারই কাউকে শিখতে দেয় না।
তুমি সোহুহং-ই বল, আর ব্রহ্মাস্মি-ই বল, কিন্তু ভক্তি অবলম্বন কর – তবেই সেই ভাব তোমাকে অবলম্বন করবে — নতুবা কিছুতেই কিছু হবে না।
অহঙ্কার যেখানে যত পাতলা, ভক্তির স্থান সেখানে তত বেশী।
আগে নিরহঙ্কার হতে চেষ্টা কর, পরে ‘সোহুহং’ বল, নচেৎ ‘সোহুহং’ তোমাকে আরো অধঃপাতে নিয়ে যেতে পারে।
আন্তরিক দীনতার মত অহঙ্কারকে জব্দ করার আর কিছুই নেই।
অহংটা যখনই মিলিয়ে যায়, জীব তখনই সর্ব্বগুণসম্পন্ন, নির্গুন হয়।
অহঙ্কার করো না, জগতে হীন হয়ে থাকতে হবে না।
নিজের গর্ব্ব যত না-করা যায়, ততই মঙ্গল, আর আদর্শের গর্ব্ব যত করা যায় ততই মঙ্গল।
অসৎ আদর্শে তোমার অহঙ্কার ন্যস্ত করো না – তা হলে তোমার অহঙ্কার আরও কঠিন হবে।
গরীয়ান্ হও, কিন্তু গর্ব্বিত হইও না।
যদি মুগ্ধ করিতে চাও — তবে নিজে সম্পূর্ণভাবে মুগ্ধ হও।
অহঙ্কার ত্যাগ কর – সৎস্বরূপে অবস্থান করতে পারবে।
বিনয়ের মত সম্মোহন-কারক আর কিছুই নেই।
দীনতাকে অন্তরে স্থান দাও – অহঙ্কার তোমার কিছুই করতে পারবে না।
দীনতাহীন অহঙ্কারী ধনী প্রায়ই অবিশ্বাসী হয়, আর তার হৃদয়ে স্বর্গের দ্বার খোলে না।
পরমপিতাই তোমার অহঙ্কারের বিষয় হউন – আর তুমি তাঁতেই আনন্দ উপভোগ কর।
তুমি তাঁর ইচ্ছাধীন হও, তোমার ইচ্ছাধীন তাঁকে করিতে চেষ্টা করিও না – কারণ তোমার নিকট তিনিই সুন্দর।সত্যানুসরণ