পীযূষ চক্রবর্তী,
আরজি কর মামলায় নির্যাতিতা চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবনের সাজা দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত। রায় ঘোষণার দিন বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন, ওই মামলার তদন্ত চলবে। ওই ঘটনায় প্রমাণ লোপাটে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন বিচারক। সোমবার ওই মামলার অগ্রগতি রিপোর্ট সোমবার শিয়ালদহ আদালতে জমা দিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়েছে, দ্রুত এই মামলার অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেওয়া হবে আদালতে।
তবে এদিন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আদালতকে জানায় সিবিআই। আরজি কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের সিম কার্ডের বিষয় নিয়েও বিচারককে জানায় সিবিআই। সিবিআই দাবি করেছে, আরজি কর মামলায় টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের ফোনের সিম কার্ডটি ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ। যেটি এখনই ফেরত দেওয়া যাবে না। বর্তমানে অবশ্য জামিনে মুক্ত রয়েছেন অভিজিৎ।
তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে সিবিআই অভিজিৎ এবং আরজি কর হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে। ওই দুজনের কাছ থেকেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়। সিবিআই অভিজিৎ এবং সন্দীপের মোবাইল ও সিম কার্ড বাজেয়াপ্ত করে। কার নির্দেশে তারা তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছিল তা জানতেই কেন্দ্রীয় সংস্থা ওই দুজনের মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড বাজেয়াপ্ত করেছিল। অভিজিৎ জামিন পেলেও আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির মামলায় এখনও জেলবন্দি সন্দীপ। সিবিআইয়ের আইনজীবী ওই সিম কার্ডটিকে তদন্তের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ’ বলে আদালতে উল্লেখ করেছেন।
শিয়ালদহ আদালত আরজি কর মামলার সাজা ঘোষণার পরই নির্যাতিতার পরিবার ও চিকিৎসকরা তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তদন্তে ঢিলেমি দেওয়ারও অভিযোগ করেন তারা। যা নিয়ে পথেও নামতে দেখা গেছে চিকিৎসকদের ও নির্যাতিতার পরিবারকে। তার ভিত্তিতেই অগ্রগতি রিপোর্ট সোমবার জমা দেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, শীঘ্রই অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেওয়া হবে আদালতে। কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট হয়েছে কিনা কেন্দ্রীয় সংস্থা তাও তদন্ত করে দেখছে। অতিরিক্ত চার্জশিটে সেইসব বিষয়গুলো উল্লেখ থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি এদিন সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই মামলার তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে একাধিক রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। যা নির্যাতিতার পরিবারের লোকজনকে জানানো হয়েছে বলে দাবি করেছে সিবিআই।
আরজি কর মামলার অগ্রগতি রিপোর্ট দিল সিবিআই
