সম্পাদকের কলমে
শ্রদ্ধেয় পাঠকমন্ডলী, প্রথমেই আপনাদের নমস্কার জানাই বঙ্গবার্তার দিক নির্দিষ্ট করে দেবার জন্য। যাতে এই সমাজমাধ্যম ভুল পথে চলে না যায়। আপনাদের সতর্ক দৃষ্টির জন্যই তো বঙ্গবার্তা কোনো এজেন্ডা সেটিং মডেল নিয়ে চলে না, অন্য সকল বড়ো ছোট গণমাধ্যমের মত।
কিন্তু আপনাদের জাগ্রত প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্যের বিস্তৃত অঞ্চলে বর্তমান যে সময় কাল স্রোতে বয়ে চলেছে তাতে এক অসহায়, অস্থিরতা যে আমাদের কমবেশি আচ্ছন্ন করে ফেলেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
চোখের সামনে রাজ্যের রাজধানী কলকাতার রাস্তায় আমরন অনশনে বসেছেন ১৮ হাজারের বেশি যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের ঐক্য মঞ্চ। যাদের মধ্যে রয়েছে দৃষ্টিহীন বিশেষ ভাবে সক্ষম শিক্ষকরাও। যাদের অনেকেই আবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
যোগ্য এই সব শিক্ষকরা কখনো ছুটে যাচ্ছেন আইন প্রণয়নকারীদের কাছে,কখনো প্রশাসনের কাছে, কখনো বিচার বিভাগের কাছে। কিন্তু নিরব হয়ে যা সামনে আসছে তা সেই রবীন্দ্রনাথের অমোঘ শব্দ বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। যখন তিনি একথা লিখেছেন পরাধীন ভারতবর্ষে ব্রিটিশের কাছে বিচার পাওয়া সত্যিই ছিল অসম্ভব। কিন্তু আজ এই রাজ্যে চাকরিহারা শিক্ষকদের অসহায় প্রচেষ্টা সেই সময় কালকেই যেনো ফিরে দেখাচ্ছে। কারণ চাকরিহারাদের দাবী তাদের ন্যায্য মিরর ইমেজ প্রকাশ করছেন না সরকার।
তা করলে চাকরি ফিরে পেতে পারেন তারা। সে কথা সত্য হলে সরকার নীরব কেনো সেই প্রশ্ন তো সহজে সামনে আসছে। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি কে আড়াল করার চেষ্টা। আর তা যদি হয়, তাহলে ৩৪ বছরের জগদ্দল পাথর সরিয়ে যে পাথর আনা হলো তা শালগ্রাম শিলা নয়। কানা পাথর।
এতো একটি দিক। পাশাপাশি রাজ্যের বিধানসভা যা গণতন্ত্রের পবিত্র জায়গা বলে বলা হয়, জনগনের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যেখানে আইন প্রণয়ন করেন সেখানে সভার শাসকদলের রক্ষকদের সঙ্গে বিরোধীদের হল হাতাহাতি। যা মন ভেঙে দেবার মত বিষয়।
শুধু তাই নয়, এই প্রথম রাজ্যে রথযাত্রা নিয়ে এক অতি উৎসাহ সরকারিভাবে চোখে পড়ছে। কুড়িদিন ধরে দুয়ারে প্রসাদ বিতরণ করছেন শাসক দলের নেতা কর্মীরা। বিরোধীরা সেটিকে বলছেন হালাল প্রসাদ একি।
কিছুদিন আগে মহেশতলায় ঘটে গেলো যে ঘটনা তা রাজ্যের পক্ষে অশনি সংকেত। অথচ এই মহেশতলার একটি কারখানা থেকে নিখোঁজ ইসলামপুরের এক শিশু শ্রমিকের এখনো খোঁজ নেই। সরকার এই ব্যাপারে একটি বিবৃতি পর্যন্ত দেয়নি।
আর এই রাজ্য পুলিশ প্রশাসন তো বাবুর হুকুমে চলতেই অভ্যস্ত। তার সঙ্গে অতি সম্প্রতি রাজ্যের উপনির্বাচনে ফল প্রকাশের দিনেই বিরোধীদলের সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ করে ছোঁড়া বোমায় মৃত্যু হলো এক চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীর। আর সেই মেয়ের বাড়িতে অর্থ সাহায্য দিতে গিয়েছিলেন শাসকদলের এক বিধায়ক।
ঠিক এমনই ঘটেছিল কলকাতার আরজিকরে এক তরুণী চিকিৎসকের রহস্য মৃত্যুর পর। মুখ্যমন্ত্রী নিজে গিয়েছিলেন ১০ লক্ষ টাকা দিতে। দুটি পরিবারই সেই অর্থ প্রত্যাখ্যান করেছে। আর এই দৃঢ় মনোভাব বঙ্গবার্তার কাছে চোখের জলে আশার আলো দেখাচ্ছে।
বঙ্গবার্তার লক্ষ লক্ষ পাঠক বলছে আছে আছে আশা আছে এখনো। শুধু পৌঁছে দাও সবার কাছে সবার কথা। মানুষ নিজেই খুঁজে পাবে নিজের রাস্তা। পথ যত আঁকাবাঁকা হোক নদীর কাছে শপথ নেওয়া মানুষের গতিরোধ করবে কারো নেই সে দুঃসাহস।
তাইতো ২৫ শে জুন এই দেশের জরুরী অবস্থার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উঠলো ধিক্কার, সেখানেও রাজনীতির সমীকরণ হয়তো রয়েছে, কিন্তু একদিন মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া দল আজ কোথায় ?
মানুষের কাছে যারা কপট ভাবে হাত জোড় করে দাঁড়ায়, তারাই একদিন কালস্রোতে ভেসে যায়, যার উদাহরণ এই রাজ্যের বাম ও কংগ্রেস দল। তাই আশা আছে, আশা আছে বাংলার জাগ্রত জনতা, আশ্বাস দিচ্ছে বঙ্গবার্তা।
পৌঁছে দিচ্ছে সবার কাছে, সবার কথা অকপট সত্য রূপে, রং ছাড়া গড়ে তোলার নতুন শপথে।