নৈরাজ্যের বাংলাদেশ ক্রমেই শিক্ষিত এবং নিরপেক্ষ মানুষদের ভরসা হারাচ্ছে। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই সেদেশে চলছে ক্রমাগত অনাচার। সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের পাশাপাশি গুণীজনদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর কাজ অব্যাহত। এবার নিরপেক্ষ আইনজীবীদের একটা বড় অংশ সেদেশের প্রশাসনের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন। তাই চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যার ঘটনায় আইনজীবীদের নিয়ে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন সকল সদস্যই। তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। আইনজীবীরাই সেই হত্যার তদন্ত করলে তার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই তাঁরা ওই তদন্ত কমিটি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম আদালতে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর হয়। ওইদিন আইনজীবীদের একটা বড় অংশ চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে মামলায় অংশগ্রহণ করা উকিলদের আক্রমণ করেছিলেন। তারপরই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় চট্টগ্রাম আদালত। কুপিয়ে খুন করা হয় আলিফকে। ওই ঘটনা তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। যার মধ্যে পাঁচজন আইনজীবী রয়েছেন।
পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রধান ছিলেন আইনজীবী মহম্মদ আবদুস সাত্তার। গত সোমবার ওই কমিটির চারজন আইনজীবী পদত্যাগ করেন। বুধবার আবদুস নিজেও ইস্তফাপত্র জমা দেন। সাত্তার বলেন, ‘এই ঘটনায় পুলিশ, প্রশাসন, আদালতের কর্তাদের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আইনজীবীরা এই ঘটনার তদন্ত করলে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তাই ইস্তফা দেওয়া হল।’
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে তাঁর জামিন খারিজ হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল চট্টগ্রাম আদালত চত্বর। আইনজীবী আলিফকে সেই সময় খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। আরিফ খুনের অভিযোগে পুলিশ ইতিমধ্যেই ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। আদালতে ভাঙচুর, অশান্তির মামলায় আরও ৪০ জন গ্রেফতার হয়েছে।