বাংলাদেশকে সিরিয়ার পথে নিয়ে যাচ্ছেন ইউনূস, ধিক্কার সর্বস্তর থেকে

পীযূষ চক্রবর্তী,
ক্রমশই সিরিয়া হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বছর পাঁচেক আগে সিরিয়াতে সাধারণ মানুষ বা বিধর্মীদের উপর নৃশংসভাবে অত্যাচার করা হতো। ধর থেকে মাথা পর্যন্ত কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটত। আইসিস জঙ্গিদের তান্ডবে স্তম্ভিত হয়ে উঠেছিল গোটা বিশ্ব। জঙ্গিদের কার্যকলাপে সে দেশে বাস করাই দায় হয়ে উঠেছিল সাধারণ মানুষের। নারীরা সুরক্ষিত ছিলেন না। সুন্দরী নারীদের যৌনদাসী করে রাখা হতো। জঙ্গিদের নিয়মিত যৌন অত্যাচারের শিকার হতে হতো মহিলাদের। বর্তমানে অবশ্য সেই সিরিয়া আমেরিকার লাগাতার বোমা বর্ষণের জেরে অতীতের সেই অত্যাচার থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু বছর পাঁচেক আগের সেই সিরিয়াকেই মনে করাচ্ছে বাংলাদেশ।
শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী থেকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই বাংলাদেশে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন হিন্দুরা। তাদের ওপর নারকীয় অত্যাচার চালানো হচ্ছে। জমি জায়গা দখল করে নেওয়া, বাড়িঘর ভেঙে পুড়িয়ে দেওয়া, হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি ও মন্দির ভাঙা নিত্যদিন লেগেই রয়েছে। জামাত ও মৌলবাদীদের উস্কানিতে সে দেশে সুরক্ষিত নন আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রীররাও। আওয়ামী লীগের কর্মীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে ভাঙচুর সবই চলছে লাগাতার। হাসিনার বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের দৃশ্য গত বছরের জুলাই মাসে দেখেছিল গোটা বিশ্বের মানুষ। তারপর মাঝে কিছুটা অত্যাচার কমলেও ফের বুধবার শুরু হয়েছে কট্টরপন্থীদের তান্ডব লীলা।
এবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িতে হামলা চালালো হাসিনাকে বিতাড়িত করার মূল কারিগর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্ররা। বুধবার রাতে মুজিবরের বাড়িতে ঢুকে পড়ে কয়েকশো ছাত্র। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় জামাতের বেশ কিছু অনুগামী। শুরু হয় তান্ডব লীলা। বাড়ির যাবতীয় আসবাবপত্র ভেঙে দেওয়া হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বাড়িতে। সেই সময় দমকলকে খবর দেওয়া হলেও কেউ আসার চেষ্টাও করেনি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তান্ডব লীলা করা হলেও পুলিশ খবর পেয়েও বসে থাকে। দমকল, পুলিশ বা প্রশাসন কেউই এই তান্ডব লীলা বন্ধ করার জন্য উদ্যোগ নেয়নি। যথেচ্ছ ভাবে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় মুজিবের স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িতে। লুটপাট করে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির মধ্যে থাকা বহু সামগ্রী। তাতেই ক্ষান্ত হয়নি বিক্ষোভকারীরা। ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের পর তারা বুলডোজার নিয়ে এসে গোটা বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সকলেই। অনেকেই বলছেন, সোনার বাংলাকে ক্রমেই সিরিয়া বানাচ্ছেন ইউনূস। অনেকেই রাষ্ট্রসঙ্ঘের হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছেন। এখন দেখার, নরকের পরিস্থিতি থেকে কত দ্রুত বাংলাদেশের মানুষ উদ্ধার হন। তবে সেখানে এই মুহূর্তে সবচেয়ে করুন পরিস্থিতি সেখানকার হিন্দু দের। এমনকি ভারতে চিকিৎসার জন্য আসতেও ভয় পাচ্ছেন বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরাও। আতঙ্কে সে দেশের গণমাধ্যমের কর্মীরাও।