একজন মানুষের ঘুম প্রয়োজন, কেন প্রয়োজন, কতটা প্রয়োজন?

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
ঘুম মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। এটি শরীর এবং মস্তিষ্ককে পুনরুদ্ধার, পুনর্গঠন এবং সঠিকভাবে কাজ করার সুযোগ দেয়। ঘুমের প্রয়োজনীয়তা নিম্নলিখিত কারণগুলোর জন্য:
শারীরিক পুনরুদ্ধার:
• ঘুমের সময় শরীরের টিস্যু, পেশী এবং কোষগুলোর মেরামত ও পুনর্জন্ম হয়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়, যা সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
• হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে, যা বৃদ্ধি, বিপাক এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা:
• ঘুম মস্তিষ্কের তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং স্মৃতি সংরক্ষণে সাহায্য করে। এটি শেখার ক্ষমতা এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করে।
• ঘুমের সময় মস্তিষ্ক অপ্রয়োজনীয় তথ্য মুছে ফেলে এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ করে।
মানসিক স্বাস্থ্য:
• পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা কমাতে সাহায্য করে।
• ঘুমের অভাব মেজাজ পরিবর্তন, বিরক্তি এবং মানসিক অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
শক্তি সংরক্ষণ:
• ঘুমের সময় শরীর শক্তি সঞ্চয় করে, যা পরের দিনের কাজকর্মের জন্য প্রয়োজনীয়।
হার্ট ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:
• ঘুম হৃদয় ও রক্তনালীর স্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
বৃদ্ধি ও বিকাশ:
• শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের জন্য ঘুম বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে।
সৃজনশীলতা ও সমস্যা সমাধান:
• ঘুম মস্তিষ্কের সৃজনশীলতা এবং জটিল সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়ায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ:
• ঘুমের অভাব ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
সর্বোপরি, ঘুম শরীর এবং মস্তিষ্কের সামগ্রিক কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। ঘুমের অভাব স্বল্পমেয়াদে এবং দীর্ঘমেয়াদে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন ক্লান্তি, মনোযোগের অভাব, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং মানসিক অসুস্থতা। তাই নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সাধারণত ৭-৯ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন। তবে, বয়স, জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্য এবং ব্যক্তিগত প্রয়োজন অনুযায়ী এই সময় পরিবর্তিত হতে পারে। নিচে বয়সভিত্তিক ঘুমের সাধারণ সুপারিশ দেওয়া হল:
নবজাতক (০-৩ মাস): ১৪-১৭ ঘন্টা
শিশু (৪-১১ মাস): ১২-১৫ ঘন্টা
টডলার (১-২ বছর): ১১-১৪ ঘন্টা
প্রিস্কুলার (৩-৫ বছর): ১০-১৩ ঘন্টা
স্কুলগামী শিশু (৬-১৩ বছর): ৯-১১ ঘন্টা
কিশোর (১৪-১৭ বছর): ৮-১০ ঘন্টা
তরুণ প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-২৫ বছর): ৭-৯ ঘন্টা
প্রাপ্তবয়স্ক (২৬-৬৪ বছর): ৭-৯ ঘন্টা
বয়স্ক (৬৫+ বছর): ৭-৮ ঘন্টা
ঘুমের গুণমানও গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে, যেমন ক্লান্তি, মনোযোগের অভাব, মেজাজ পরিবর্তন এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা। তাই নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।