“দোষ দেখা ও পরনিন্দা”

অমৃতকথা

সত্যানুসরণ

এটা খুবই সত্যি কথা যে মনে যখনই অপরের মঙ্গলবিহীন স্বার্থবুদ্ধি থেকে কারু দোষ দেখবার প্রবৃত্তি এসেছে,তখনই ঐ দোষ নিজের ভিতর এসে বাসা বেঁধেছে। তখনই কালবিলম্ব না- করে ওই পাপ-প্রবৃত্তি ভেঙ্গে’ চুরে’ ঝেঁটিয়ে সাফ্ ক’রে দিলে তবে নিস্তার, – নইলে সব নষ্ট হ’য়ে যাবে।

দোষ দেখিয়া দুষ্ঠ হইও না – আর তোমাতে সংলগ্ন সবাইকে দুষ্ট করিয়া তুলিও না।
তোমার নজর যদি অন্যের কেবল কু-ই দেখে তবে তুমিম কখনই কাউকে ভালবাসতে পারবে না। আর যে সৎ দেখিতে পারে না, সে কখনই সৎ হয় না।

তোমার মন যত নির্ম্মল হ’বে, তোমার চক্ষু তত নির্ম্মল হ’বে – আর জগৎটা তোমার নিকট নির্ম্মল হ’য়ে ভেসে উঠবে।
পরনিন্দা করাই পরের দোষ কুড়িয়ে নিয়ে নিজে কলঙ্কিত হওয়া, – আর পরের সুখ্যাতি করার অভ্যাসে নিজের স্বভাব অজ্ঞাতসারে ভালো হয়ে পড়ে।

যদি সুন্দর হ’তে ইচ্ছা থাকে তবে বিশ্রী কেও সুন্দর দেখ। কখনও নিন্দা ক’রো না, কিন্তু অসত্যের প্রশ্রয় দিয়ো না। তোমার ভাষা যদি কুৎসাকলঙ্ক-জড়িতই হয়ে থাকে; অপরের সুখ্যাতি করতে না-পারে, তবে যেন কারো প্রতি কোন মতামত প্রকাশ না করে। আর মনে-মনে তুমি নিজ স্বভাবকে ঘৃণা করতে চেষ্টা কর। এবং ভবিষ্যতে কুৎসা-নরক ত্যাগ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হও।

নিজের দোষ জেনেও যদি তুমি তা’ ত্যাগ করতে না পার, তবে কোন-মতেই তার সমর্থন ক’রে অন্যের সর্ব্বনাশ ক’রো না।
তুমি যাই দেখ না কেন — অন্তরের সহিত সর্ব্বাগ্রে তা’র ভালোটুকুই দেখতে চেষ্টা কর, — আর এই অভ্যাস তুমি মজ্জাগত ক’রে ফেল।

তাই ব’লে কোন স্বার্থবুদ্ধি নিয়ে অন্যের সুখ্যাতি করতে নেই – সে তো খোসামোদ! সে ক্ষেত্রে মন-মুখ প্রায়ই এক থাকে না। সেটা কিন্তু বড়ই খারাপ, আর তা’তে নিজের স্বাধীন মত প্রকাশের শক্তি হারিয়ে যায়।
ভালমন্দ বিচার ক’রে বিধ্বস্ত হওয়ার চেয়ে সৎ-এ (গুরুতে) আকৃষ্ট হও – নির্বিঘ্নে সফল হ’বে নিশ্চয়।

তুমি যদি সৎ হও — তোমার দেখাদেখি হাজার হাজার লোক সৎ হ’য়ে পড়বে আর যদি অসৎ হও – তোমার দুর্দ্দশার জন্য সমবেদনা প্রকাশের কেহই থাকবে না, কারণ তুমি অসৎ হ’য়ে চারিদিকই অসৎ ক’রে ফেলেছ।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রসত্যানুসরণ

19:40