গরমে খান কুঁজো বা কলসির জল, সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি জুড়োবে প্রাণ

Published By Subrata Halder on 2nd April 2025 at 12:35pm

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
অনেকেই গরমকালে ঠান্ডা জল বলতে খোঁজ করেন ফ্রিজের জল।ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের সংস্কৃতিতে প্রচলিত ঐতিহ্যবাহী কুঁজো বা কলসির ব্যবহার। মাটির পাত্রে জল রাখা শুধু পরিবেশবান্ধবই নয়, এতে প্লাস্টিক বা ধাতব পাত্রের তুলনায় বেশ কিছু স্বাস্থ্যকর উপকারিতাও মেলে। মাটির পাত্রে রাখা পানীয় জলের বেশ কিছু উপকারিতা আছে যা জানলে আপনি অবাক হবেন।

প্রথমত :
প্রাকৃতিক ভাবে ঠান্ডা
মাটির হাঁড়ির ক্ষুদ্র ছিদ্রগুলির মাধ্যমে ধীরে ধীরে জল বাষ্পে পরিণত হয়, যা বিদ্যুৎ ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে জলের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়। এতে জল সবসময় মনোরম ঠান্ডা থাকে, যা গরম আবহাওয়ার জন্য আদর্শ।
দ্বিতীয়ত :
ক্ষারধর্মী বৈশিষ্ঠ্য
মাটি স্বাভাবিকভাবেই ক্ষারধর্মী যা জলকে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে এবং শরীরের অম্লতা কমায়। এই জল আমাদের হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং অ্যাসিডিটি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
তৃতীয়ত :
বিপাক ও হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি
মাটির হাঁড়িতে জল রাখলে মাটির খনিজ উপাদানের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে তা আমাদের পরিপাক ক্রিয়াকে উন্নত করে। এই জল সহজে হজম হয় এবং শরীরে পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে।
চতুর্থত :
খনিজ সমৃদ্ধ
মাটিতে থাকা প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস জলে মিশে যায়।এটি প্রাকৃতিক ভাবে ইলেক্ট্রোলাইট সরবরাহ করে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
পঞ্চমত :
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
মাটির হাঁড়ির ছিদ্রযুক্ত গঠন জলের সঙ্গে প্রাকৃতিক উপাদানগুলির সংমিশ্রন ঘটায়, যা উপকারী অণুজীবের কার্যকলাপ বাড়িয়ে তুলতে পারে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হতে পারে।
ষষ্ঠত :
ক্ষতিকর রাসায়নিক মুক্ত
প্লাস্টিক পাত্রের মতো (যা BPA এবং অন্যান্য বিষাক্ত রাসায়নিক নিঃসরণ করতে পারে) মাটি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা জলকে দূষিত করে না। এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং রাসায়নিকমুক্ত উপায়ে পানীয় জল সংরক্ষণের একটি উপযুক্ত বিকল্প।
সপ্তমত :
স্বাদেও দারুণ
মাটির হাঁড়ির জল মাটির নিজস্ব গন্ধ ও স্বাদ শোষণ করে, যা এক বিশেষ ধরণের মিষ্টি ও সতেজ স্বাদ প্রদান করে। অন্যান্য ধাতব বা প্লাস্টিকের পাত্রের জলের তুলনায় জল খেতে অনেক ভাল।
অষ্টমত:
পরিবেশবান্ধব
মাটির হাঁড়ি সহজেই পচনশীল এবং প্লাস্টিক দূষণে কোনো অবদান রাখে না। এটি প্লাস্টিক পাত্রের একটি স্থায়ী বিকল্প হিসেবে কাজ করে।
নবমত :
গরম থেকে সুরক্ষা
মাটির হাঁড়ির ঠান্ডা জল শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা গ্রীষ্মকালে হিটস্ট্রোক ও জলশূন্যতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা নেয়।
দশমত :
গলার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
রেফ্রিজারেটরের অতিরিক্ত ঠান্ডা জল গলায় জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে, যেখানে মাটির হাঁড়ির হালকা ঠান্ডা জল স্বাস্থ্যের জন্য আরামদায়ক।
তবে মাটির পাত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনাকে মেনে চলতেই হবে।যেমন মাটির হাঁড়ি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে যাতে শেওলা বা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি না ঘটে। সহজেই ভেঙে যেতে পারে তাই মাটির পাত্র সবসময় সাবধানে ব্যবহার করা প্রয়োজন।

18:08