দুর্গম সুন্দরবনে সন্তান প্রসব সুগম করতে ভাসমান স্বাস্থ্যকেন্দ্র,সঙ্গে অপেক্ষমান ওয়েটিং হাট

Published By Subrata Halder, 17 May 2025, 08:48 pm

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
জল জঙ্গলে ঘেরা সুন্দরবনের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যথেষ্ট কঠিন। সাধারণ মানুষ ভালো করেই তা জানেন। কিন্তু এই দুর্গম সুন্দরবনে স্বাস্থ্য পরিষেবাকে সুগম করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। সুন্দরবনের মধ্যে পড়ে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার এমন বহু দ্বীপাঞ্চল। যেখানে অ্যাম্বুল্যান্সও পৌঁছায় না। সেইসব অঞ্চলে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে নদীপথে ভাসমান স্বাস্থ্যকেন্দ্র পাঠানো শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই বসিরহাট মহকুমার অন্তর্গত হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে এই প্রকল্প চালু হয়েছে।
নদী-নালায় ঘেরা এইসব প্রত্যন্ত এলাকায় দরিদ্র মানুষদের দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছে চিকিৎসা পরিষেবা। নৌকায় থাকা ভাসমান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছে প্রাথমিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা, টিকাকরণ, মায়েদের ও শিশুর স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রাথমিক পরিষেবা। রক্তপরীক্ষা ও সুগার পরীক্ষাও করা হচ্ছে সেখানে। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানাচ্ছেন, এই প্রকল্পের ফলে বহু মানুষেরই আর ব্লক হাসপাতালে যাওয়ার দরকার পড়ছে না।
শুধু তাই নয়, প্রসূতিমৃত্যুর হার কমাতে রাজ্যের ওয়েটিং হাট প্রকল্প ইতিমধ্যেই সফলতার মুখ দেখেছে। এই প্রকল্পে রাজ্যের প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকার গর্ভবতী মহিলাদের ডেলিভারির ৭-১০ দিন আগে হাসপাতালের কাছাকাছি ওয়েটিং হাট এ রাখা হচ্ছে । সেখানে তাদের জন্য ওষুধ, খাবার, পরীক্ষা ও রেফারাল পরিষেবা ব্যবস্থায়
কোন খরচ লাগছে না।
সুন্দরবন সহ একাধিক জায়গায় ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে এই ওয়েটিং হাট। সরকারি হিসেব বলছে, এই উদ্যোগের ফলে রাজ্যে প্রসূতি মৃত্যুর হার কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি লাখে ১০১ জনে। আগে যা ছিল ১৪১ জন। হাসপাতালে প্রসবের হার বেড়ে হয়েছে ৯৯ শতাংশ, যা একসময়ে ছিল ৮৮ শতাংশ।
স্বাস্থ্য ভবনের কর্তা থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, এই প্রকল্প গুলির ফলে দুর্গম এলাকার গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে হাসপাতালে সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে এক নতুন আত্মবিশ্বাস এসেছে। জটিল গর্ভাবস্থার ক্ষেত্রেও ওয়েটিং হাট প্রকল্প অসামান্য পরিষেবা দিচ্ছে।
রাজ্যের এই ভাসমান স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ওয়েটিং হাট উদ্যোগ নিঃসন্দেহে দেশের বাকি রাজ্যগুলির কাছেও একটি মডেল হয়ে উঠবে ভবিষ্যতে, এমনই মনে করছেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

04:56