মাগুরার সেই শিশুর মৃত্যুতে উত্তাল বাংলাদেশ,স্মরণে জ্বলল মোমবাতি, বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
গোটা বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দেওয়া মাগুরার সেই ধর্ষণের শিকার হওয়া শিশুকন্যাকে বাঁচানো যায় নি। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হল।গত ৮ মার্চ থেকে চিকিৎসাধীন ছিল সে।মাগুরায় দিদির বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সেখানেই নিজের আত্মীয়দের লালসার শিকার হয় সে। শিশুটির মায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তদের। অভিযোগে জানানো হয় তাঁর বড় মেয়ের শ্বশুর ছোট মেয়েকে ধর্ষণ করেছেন। এই কাজে তাঁকে সহায়তা করেছেন বড় মেয়ের স্বামী বা শিশুটির জামাইবাবু। গোটা ঘটনার কথা জানতেন শিশুটির দিদির শাশুড়ি এবং ভাসুর।
এই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় বাংলাদেশে।নারী নির্যাতন, হিংসা কেন বেড়েই চলেছে তা নিয়ে ইউনূস প্রশাসনের জবাবদিহি চেয়ে পথে নামে মানুষ।বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদে নামে পড়ুয়ারা।বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাঁর অডিও বার্তায় মাগুরা-সহ বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ধর্ষণের ঘটনায় বারে বারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অত্যাচারের ঘটনার দিন ওই শিশু বরাতজোরে প্রাণে বেঁচে গেলেও সেই থেকে হাসপাতালেই ভর্তি ছিল সে। গত বৃহস্পতিবার তাকে অচৈতন্য অবস্থায় মাগুরার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় ওই শিশুকে। শনিবার তাকে স্থানান্তরিত করা হয় সামরিক হাসপাতালে। লাইফ সাপোর্টে শিশুটির চিকিৎসা চলছিল। বৃহস্পতিবার সকালে একবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয় তার। সিপিআর দেওয়ার পর তার হৃৎস্পন্দন ফিরে আসে। দুপুরে ফের ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’, এবারে সিপিআর দিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
শিশুর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনার বিচারপ্রক্রিয়া ছ’মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ হাই কোর্ট।মাগুরার সেই শিশুর মৃত্যু ঘিরে এদিন ফের উত্তাল হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত। এদিন ধর্ষণে অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। রাতে কুমিল্লায় মোমবাতি প্রজ্বালন করেন ‘ধর্ষণ প্রতিরোধী ছাত্রসমাজ। সারাদেশে হত্যা, ধর্ষণ, নারী নিপীড়নের সুষ্ঠু বিচারসহ ৩ দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মশাল মিছিল করে ছাত্র ও জনতা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে এ মশাল মিছিল শুরু হয়।