Upload By K. Halder at 20th March 2025, 06:04 PM
বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
উপরের লাইনটি হিংসা বিদ্ধস্ত মুর্শিদাবাদের হঠাৎ শরণার্থী হয়ে পড়া হিন্দু মহিলাদের। যাদের সংখ্যা কম নয়। এই প্রতিক্রিয়া একজন বিবাহিত মহিলার পক্ষে বানিয়ে বলাও সহজ নয়। তাও আবার এমন একজন মহিলার কাছে যে পাড়া প্রতিবেশী নিদেন পক্ষে জেলার বা রাজ্যের কোনো নেত্রীও নন। কিন্তু এমন অভিযোগকারিণীর সংখ্যা অনেক। আর এই ভয় বা আতঙ্ক কেউ মানুন বা অস্বীকার করুন বাস্তব চিত্র মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্থ ভিটে ছাড়া পরিবারের মানুষদের।
দুদিন ধরে শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের সঙ্গে কথা বলে কলকাতায় ফিরে এই পরিস্থিতির কথা জানালেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সভানেত্রী বিজয়া রাহাতকর। কলকাতার একটি হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি অকপটে বললেন মেয়েদের উপর নির্যতন হয়েছে, ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সদম্ভে ঘর থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এসব নিয়ে রাজনীতি করার উদ্দেশ্য বলা হচ্ছে তা নয়। রাজ্যের মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা গেলেই সত্যতা বুঝতে পারবেন।
সবচেয়ে যা চিন্তার তা হল ঘরছাড়া মানুষের ক্ষোভ তাদের অপরাধ টা কি, কেনো তাদের উপর এই ভাবে অত্যাচার নেমে এলো সেটাই বুঝতে পারছেন না। তবে কি তারা এখানে থাকতে পারবেন না। এই কথা জিজ্ঞাসার কারণ হিসেবে নির্যাতিতাদের বক্তব্য সেদিন যারা আক্রমণ করেছে তারা চিৎকার করে বলেছে এখানে তাদের রাজত্ব, তারা যা খুশি করতে পারে। কোনো পুলিশ কেউ কিছু করতে পারবে না। পৈশাচিক উল্লাসে দেব মূর্তি ভেঙে দেওয়া বা ঘরে আগুন লাগানোর মতো ঘটনা যে ঘটবে তা তারা কল্পনাও করতে পারেন নি, রাহাতকর কে তারা এমনটি জানিয়েছেন। কমিশন তাদের নিজের চোখে দেখা ও কথা বলে জানতে পারা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের মহানির্দেশক
মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দেবেন। বিজয় রাহাত কারের ক্ষোভ ক্যাম্পে যারা আছেন, তারা বিপর্যস্ত ও বিধ্বস্ত।
সরকারের উচিত প্রথম তাদের আস্থা ফেরানো। সেই আস্থা ফেরানোর শর্ত প্রশাসনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে তারা পুলিশের উপর ভরসা করছেন না, যার কারন ও আক্রমণ কারীরা বলেছে পুলিশ তাদের কেনা। বলে কিছু লাভ হবে না।তারা সীমা সুরক্ষা বল বা বিএসএফের নিরাপত্তা চাইছেন।
তার কারণ হিসেবেও তাদের বক্তব্য সেদিন বিএসএফ শেষ পর্যন্ত এসে না পড়লে শুধু হর গোবিন্দ ও তার ছেলে নয়, আরো অনেক লাশ পড়তো। আরো অনেক বাড়ি জ্বলত। বিএসএফ ই তাদের রক্ষা করেছে। কিন্তু রাজ্য সরকার ও তার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিএসএফ কেই এই ঘটনায় দায়ী করেছেন।
তারা সড়যন্ত্র করে সীমান্ত দিয়ে লোক ঢুকিয়ে এই আক্রমণ ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তাদের। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, মানুষের যন্ত্রণা দুঃখ কষ্ট নিয়ে রাজনীতি করতে তারা আসেন নি। মুখ্যমন্ত্রী বা তার মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা গেলেও দেখতে পাবেন। দাঙ্গার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে মহিলা ও শিশুদের মনে।সেই ক্ষত যত দ্রুত মেরামত করা যায় সেটাই অগ্রাধিকার হওয়া উচিত সরকারের। পাশাপাশি ওই ঘটনায় সংবেদনশীল ও সহানুভূতির সঙ্গে দেখতে হবে।
শিবিরে যারা আছেন তাদের খাবারের মান ও উপযুক্ত নয়। আর তাদের দ্রুত বাড়ি নির্মাণ করে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশন। দিল্লী ফিরে যাওয়ার আগে এদিন কমিশনের প্রতিনিধিরা রাজভবনে রাজ্যপাল গোপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখাকরেন, পরিস্থিতির বিস্তারিত তথ্য জানান। সমগ্র ঘটনার সঙ্গে রাজ্যরাজনীতির কোনো বিষয় নিয়ে এদিন কোনো মন্তব্য করেনি কমিশন। তবে সরকারের কাছ থেকে আরো একটু প্রোঅ্যাক্টিভ ভূমিকা তারা প্রত্যাশা করছেন বলে জানান। নারী ও শিশুদের স্বার্থে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ছেড়ে এগিয়ে আসার কথা বলেন কমিশনের চেয়ারপার্সন।