বঙ্গবার্তা ব্যুরো
২০২৪-এর বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে গ্রামীণ এলাকায় প্রশাসনকে সক্রিয় করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে নবান্ন। শুরু হয়েছে পঞ্চায়েতগুলির কাজকর্মের মূল্যায়ন। প্রশাসন সূত্রে খবর, জুলাই মাস থেকেই পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আওতায় এই পর্যালোচনা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
প্রতি অর্থ বর্ষে পঞ্চায়েত গুলির কাজের মূল্যায়নের রীতি। তবে এবার সেই কাজের গতি এবং কড়াকড়ি করছে সরকার। প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, এবারের মূল্যায়নে নতুন সূচক যুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয়ের অন্তত ৫০ শতাংশ জনস্বার্থে খরচ এবং আগের বছরের তুলনায় অন্তত ১০ শতাংশ আয়বৃদ্ধি।
এই মূল্যায়নের মাধ্যমে রাজ্য সরকার চাইছে, পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে এক ধরনের উন্নয়ন মূলক প্রতিযোগিতা তৈরি হোক। প্রশাসনিক সূত্রের মতে, সেই মানসিকতা গড়ে তুলতেই এ বছর কঠোর নজরদারির পথে হাঁটছে নবান্ন। ইতিমধ্যে রাজ্যের সব জেলা প্রশাসনকে নির্দেশিকা
পাঠানো হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের এক জেলাশাসক জানান, অনেক পঞ্চায়েত বিভিন্ন উৎস থেকে আয় করলেও তা জনস্বার্থে ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারে না। সেই সমস্যা দূর করতেই রাজ্য সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে সরকার।
এবারের, রাজ্য বাজেটে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে সর্বাধিক পরিমাণ অর্থ। সরকারের ব্যাখ্যা, ১০০ দিনের কাজ বা গ্রামীণ সড়ক যোজনার মতো প্রকল্পগুলিতে কেন্দ্রের তরফে টাকা বন্ধ থাকায় রাজ্যকেই খরচ বহন করতে হচ্ছে। ফলে গ্রামীণ উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়ানো ছাড়া বিকল্প ছিল না।
প্রশাসনের মতে, এই গ্রাম ঘেরা বাজেট এবং পঞ্চায়েত মূল্যায়নের কড়াকড়ি দুটোর মধ্যেই রয়েছে স্পষ্ট রাজনৈতিক ইঙ্গিত। লোকসভা ভোটে শহরাঞ্চলে বিজেপির সাফল্যের তুলনায় গ্রামে তৃণমূল অনেকটাই এগিয়ে ছিল। বহু লোকসভা কেন্দ্রে দেখা গিয়েছে, পুর এলাকায় বিজেপি জিতলেও লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলই বেশি ভোট পেয়েছে।
সেই প্রেক্ষিতেই প্রশাসনিক মহলের একাংশ মনে করছেন, বিধানসভা ভোটের আগে গ্রাম ধরে শহর জয়ের পরিকল্পনায় পঞ্চায়েতের কাজের মূল্যায়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে নবান্ন।