Upload By K. Halder at 24th April 2025, 08:31 PM
বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর যখন রাজ্যের একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল ধর্ম নিয়ে কথা বলছে। তখন ঘুরিয়ে সম্প্রীতির বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ১০০ বছর ভারতকে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ অনুষ্ঠানে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন ধর্ম সম্প্রদায় বা জাত দিয়ে নয়। কাজই মানুষের পরিচয় হওয়া উচিত।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,
দেশ গড়ার কাজে খেলাধুলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেখানে সমস্ত ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষ অংশগ্রহণ করে। আমরা কিন্তু জিজ্ঞাসা করি না, তোমার জাতি কি। এটাই দেশের ধর্ম। এটাই ধর্ম বাংলার। বিশ্বকাপে যখন ভারতীয় দলে যারা খেলে আমরা তখন জিজ্ঞাসা করি না, তুমি হিন্দু না মুসলিম। তুমি রাজস্থানী, গুজরাটি, মারোয়ারি না বাঙালি। ইন্ডিয়ান ক্যাপ্টেন আমাদের সকলের কাছেই ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন। আদতে তিনি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। আমরা সেভাবেই তাকে দেখি। তিনি বলেন সৌরভ গাঙ্গুলী যখন ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন ছিল তখন অবশ্যই আমরা বাঙালি বলে গর্ব বোধ করতাম। কিন্তু তার টাইটেল বা ধর্ম দিয়ে তাকে দেখিনি। তাই বলে সেই সময় কি তিনি দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতেন না। তিনি বলেন এখনই আর বেশি কিছু বলবেন না, যখন সময় আসবে তখন বলবেন।
গতকাল কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর থেকেই একটি নির্দিষ্ট ধর্মাবলম্বী মানুষদের নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার দলের মন্ত্রী ও নেতাদের ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করতে বারণ করেছেন। এই ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন সন্ত্রাসবাদীদের জাত ও ধর্মের ভিত্তিতে বিচার করতে চাই না। তারা জন্মগত অপরাধী। তাদের ক্ষমা করা উচিত নয়।
কিন্তু তারপরেও নির্দিষ্ট ধর্মাবলম্বী মানুষদের লক্ষ্য করে বক্তব্য কিন্তু থামেনি। আর সেই জায়গায় সরাসরি কোন প্রসঙ্গের উল্লেখ না করে মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ক্রীড়া ক্ষেত্রে এই উদাহরণকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রী আদতে চেষ্টা করলেন যাতে একটি নির্দিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের লক্ষ্য করে বক্তব্য বন্ধ হয়। তবে সরাসরি তিনি কারো নাম উল্লেখ করেননি বা কাউকে আক্রমণ ও করেননি। তবে যতটুকু বলেছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্প্রীতির আবহ তৈরি করার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী বলে মনে করছেন তারা।
প্রসঙ্গত এদিন এই মঞ্চ থেকেই সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়কে রাজারহাটে একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরির জন্য জায়গা দেওয়ার কথা বলেন। সিএবির তরফ থেকে ডুমুরজলায় যে জায়গাটিকে চিহ্নিত করা হয়েছিল সেটি আদালতের বিচারাধীন থাকার কারণে আটকে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ সেখানে একটি ক্রিকেট একাডেমী তৈরি করে রাজারহাটে ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরি করা হোক। তিনি বলেন কয়েক বছর আগে ফিফাকে ফুটবল স্টেডিয়াম করার জন্য জায়গা দেওয়া হয়েছিল। তারা এখনো পর্যন্ত সেখানে কোনো কিছুই করেনি। সেখানেই ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরি করা হোক। প্রয়োজনে এর জন্য আইন সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।