দশ বছরে দেশের ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার ওপরে এসেছেন দাবী প্রধানমন্ত্রীর

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
মঙ্গলবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের প্রত্যুত্তরে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী । নিজের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী, রাহুল গান্ধী এবং কেজরিওয়ালকে এক সঙ্গে বিঁধলেন। রাহুল গান্ধী রাষ্ট্রপতির ভাষণকে একই কথার পুনরাবৃত্তি বলে উল্লেখ করেছিলেন। এদিন মোদি রাহুলের নাম না করে বলেন, কারুর কারুর ওই বক্তব্য বোরিং লেগেছে। তাঁদের ছবি তোলায় বেশি নজর থাকে।
রাহুল বাজেটের সমলোচনা করে বলেছিলেন তা হল, বুলেটের আঘাত প্রাপ্তকে ব্যান্ড-এইড দেওয়া। এদিন মোদি তার জবাবে বলেন, আমরা প্রতি বছর আয়কর ছাড় দিতে দিতে মানুষের ক্ষত পূরণ করেছি। বাকি ছিল আর একটু তাও আমরা এবারের বাজেটে করেছি। ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়করে ছাড় দিয়েছি। তাতে ব্যান্ড এইডের কাজও পুরো হয়েছে।
মোদি এদিন তাঁর বক্তব্যে বার বার তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধান অবমননার অভিযোগ ওঠারও জবাব দিয়েছেন। সংবিধান এবং দেশের ঐতিহ্যের প্রতি তাঁদের নিষ্ঠার উদাহরন হিসেবে বল্লভ ভাই প্যাটেলের মূর্তি গড়ার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন প্যাটেল বিজেপি নেতা ছিলেন না, তবু আমরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।
রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন দেশে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। মোদি জবাবে বলেন আমরা কারুর সঙ্গে ভেদাভেদ করিনা। এই উদ্দেশ্যেই মুসলিম মহিলাদের জন্য তাঁরা তিন তালাকের অবসান করেছেন। তিনি দাবি করেন জম্মু-কাশ্মীরের জন্য তাঁরাই সংবিধানের সঠিক প্রয়োগ করেছেন।তিনি একই সঙ্গে তুষ্টিকরণের রাজনীতির সমালোচনা করে বলেন, তাঁরা চান সব মানুষের সন্তুষ্টিকরণ।
শুধু রাহুল নয়, তিনি রাজীব গান্ধীর নাম না উল্লেখ করে তাঁরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন রাজীব গান্ধীর বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না। তার প্রমাণ মেলে বিখ্যাত কার্টুনিস্ট আর কে লক্ষণের কার্টুনে ।
মোদি এদিন কংগ্রেসের গরিবি হঠাও শ্লোগানের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন আমরা এতদিন এই শ্লোগান শুনেছি। কিন্তু আমাদের দশ সালের শাসনকালে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার ওপরে এসেছেন।
সনিয়া গান্ধীর নাম না করেও তাঁর সমালোচনা করেন মোদী। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি এক গরীব পরিবার থেকে উঠে আসা মহিলা। তার সম্পর্কেও কেন এত বিদ্বেষ ? তাকে এত অপমান কেন?
রাহুলের পাশাপাশি অরবিন্দ কেজরিওয়ালেরও তীব্র সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, দেশের অর্থ রাষ্ট্র নির্মাণে ব্যয় করা উচিত। নিজের জন্য শিস মহলে তা খরচ করা উচিত নয়।
নিজের বক্তব্যে মোদি দেশের এস সি, এস টি সমেত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য তাঁর সরকারের কাজের উল্লেখ করেন।তিনি দাবি করেন তাঁর সরকারের বিভিন্ন কাজের জন্য সাধারণ মানুষের আর্থিক লাভ হয়েছে। এই প্রসঙ্গেই তিনি দাবি করেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের ফলে সাধারণ মানুষের এক লাখ কুড়ি হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় হয়েছে। এর পাশাপাশি জনওষুধি প্রকল্পের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন এই কেন্দ্র থেকে ৮০ শতাংশ কমে ওষুধ দেওয়া হয়। যাঁরা এই কেন্দ্র থেকে ওষুধ কিনেছেন তাঁদের ৩০ হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় হয়েছে।
তিনি বলেন তাঁর সরকার ডাবল এ আই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর আমরা তার সঙ্গে জুড়েছি অ্যাস্পিরেশনাল ইন্ডিয়া।মোদি বলেন তাঁর সরকার দেশের পরমাণু এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের দরজা খুলে দিয়েছেন।
তাঁর দাবি এন ডি এ সরকারের সময়ে দেশে মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা এবং তার আসন বেড়েছে। একই সঙ্গে আসন বেড়েছে এস সি এস টি ছাত্রদের জন্য আসনের সংখ্যাও।
মোদি তাঁর ভাষণে এম এস এম ই প্রকল্পের উল্লেখ করেন। এই প্রসঙ্গেই তিনি খেলনা হাব তৈরির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন ২০৪৭ সালে ভারত তার স্বাধীনতার একশ বছর পূর্ণ করবে, তখন তাঁদের বিকশিত ভারতের স্বপ্ন পূরণ হবে। তিনি বলেন এই স্বপ্ন পূরণ করার জন্য বার বার ফিরে আসবেন।