ব্যাঙের ছাতার মত গজাচ্ছে বেসরকারি স্কুল, বন্ধ হচ্ছে সরকারি স্কুল, কলকাতায় ১১৯

Published by Subrata Halder, 24th May 2025

বঙ্গবার্তা ব্যুরো
স্কুল তো আছে, নেই শুধু ছাত্রছাত্রী। স্বাধীনতার আগে যাত্রা শুরু করা বহু প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজ পড়ুয়াশূন্য। শুধু তাই নয়, একুশ শতকের শুরুতে গড়ে ওঠা বেশ কিছু আধুনিক স্কুলেও পড়ুয়ার দেখা নেই। রাজ্য জুড়ে এমন স্কুলের সংখ্যা ৩৪৮। যার মধ্যে ১১৯টি ছাত্র শূন্য স্কুলে রয়েছে এই কলকাতায়।
চলতি দশকে এই প্রথম এমন এক চিত্র উঠে এল রাজ্য সরকারি রিপোর্টে, যা নাড়া দিয়েছে নীতি নির্ধারকদের। শহর হোক কিংবা মফস্বল, ছবি প্রায় একই। ফাঁকা ক্লাসঘর, বন্ধ লাইব্রেরি, নীরব প্রার্থনাস্থল। চার বছর ধরে এই স্কুলগুলিতে কোনও নতুন ছাত্রের মুখ দেখেননি শিক্ষকরা, জিরো এনরোলমেন্ট’ স্কুল।
শিক্ষাবিদেরা বলছেন, এই চিত্র আসলে সরকারি স্কুল ব্যবস্থার দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার বহিঃপ্রকাশ। একাংশের মত, ইংরেজি মাধ্যম বেসরকারি স্কুলের প্রতি অভিভাবকদের ঝোঁক, সরকারি শিক্ষানীতির ঘাটতি, পরিকাঠামোর হাল আর শিক্ষক সংকট সব মিলিয়েই এমন দশা। অনেকে মনে করেন, স্কুল আছে, শিক্ষকও আছেন, কিন্তু ছাত্র নেই এই বাস্তবতা সরকারি পরিকল্পনার বড় ব্যর্থতা।
তবে সমস্যা সঙ্কটেই শেষ হচ্ছে না, বিকল্প পথ খুঁজছে রাজ্য সরকার। নারী ও শিশু কল্যাণ দফতর ইতিমধ্যেই ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে, কীভাবে এই পরিত্যক্ত স্কুল ভবনগুলি ব্যবহার করা যায়। পরিকল্পনা হচ্ছে, যে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি এখন ভাড়া বাড়ি, ক্লাবঘর বা কারও ব্যক্তিগত প্রাঙ্গণে চলে, সেগুলিকে স্থানান্তরিত করা হবে এই স্কুলগুলিতে। তাতে দুই পক্ষেরই লাভ হবে। সরকারের জায়গা কাজে লাগবে, আর শিশুরাও পাবে উন্নত পরিকাঠামো, জল, শৌচালয়সহ প্রয়োজনীয় পরিষেবা।
এখনও পর্যন্ত শিক্ষাদফতর এই স্কুলগুলিকে সরকারিভাবে বন্ধ ঘোষণা করেনি। কোথাও কোথাও শিক্ষকরা রয়েছেন, কেউ কেউ অবসরে চলে যাওয়ার পরে আর কেউ নেই। কোথাও আবার বাড়তি শিক্ষক বদলি করে পাঠানো হয়েছে ছাত্রবহুল স্কুলে।
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক সংগঠনগুলির দাবি, সমস্যার মূলে হাত না দিলে কোনও প্রকল্পই স্থায়ী সমাধান আনবে না। সরকারি স্কুলে পড়ার আকর্ষণ ফিরিয়ে আনতেই হবে। ভবিষ্যতের জন্য এ এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে এই চরম অনিশ্চিত জীবনে তাদের পরিণতি কি সেই দুশ্চিন্তা নিয়ে কাটাচ্ছেন শিক্ষকরা।

12:01