মুর্শিদাবাদে ত্রাণ শিবিরের স্বেচ্ছা সেবকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর

Suvendu Adhikari allegations on Murshidabad relief camps

Upload By K. Halder at 20th March 2025, 11:25 AM

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
ওয়াকফ সংশোধনী বিল কেন্দ্রীয় সংসদে পাশ হওয়ার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় অশান্তি তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষ, যা নিয়ে এই পরিস্থিতিকে এক গভীর মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। ঠিক এই আবহেই বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন, ওয়াকফ আইনের বিরোধিতার অজুহাতে মৌলবাদী শক্তিরা হিন্দুদের উপর জাতিগত নিধনযজ্ঞ শুরু করেছে, এবং রাজ্য প্রশাসন সেই ঘটনাগুলিকে নীরব থেকে প্রত্যক্ষ মদত দিচ্ছে।


শুভেন্দুর বক্তব্য অনুযায়ী, বহু হিন্দু পরিবার বিশেষ করে মহিলা ও শিশু রাত্রি বেলা নদী পেরিয়ে, ঘরবাড়ি ও গবাদি পশু ফেলে মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগরের দেওনাপুর, সোভাপুর অঞ্চলে এসে আশ্রয় নিচ্ছেন পারলালপুর হাই স্কুল ও তার আশেপাশের এলাকায় থাকছেন। তার অভিযোগ, রাজ্য সরকার ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এই ত্রাণ শিবিরগুলিকে কার্যত ডিটেনশন ক্যাম্পে পরিণত করেছে। শিবিরে বসবাসকারী শরণার্থীদের সংবাদমাধ্যম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা বাইরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তাদের দেওয়া খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। তিনি লিখেছেন, শরণার্থীদের দেওয়া হচ্ছে কাঁকরে ভর্তি ভাত ও পোকাধরা সবজি।

আরও গুরুতর অভিযোগ সাহায্যে এগিয়ে আসা স্বেচ্ছাসেবকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার হুমকি ও হয়রানি চলছে। এক স্বেচ্ছাসেবীর বিরুদ্ধে বৈষ্ণবনগর থানায় ভারতীয় ফৌজদারি আইন এর ১৭৯ নং ধরা অনুযায়ী নোটিশ জারি হয়েছে, যা শুভেন্দু অধিকারী নিজেই প্রকাশ করেছেন। ৩৩৮/২৫ নম্বর মামলায় একাধিক ফৌজদারি ধারা প্রয়োগ করে ওই স্বেচ্ছাসেবীকে তদন্তে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। অনুপস্থিতি হলে ধারা ২০৮ অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।


শুভেন্দু অধিকারী প্রশ্ন তুলেছেন, যারা নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়াতে চাইছে, তাদের বিরুদ্ধে কি সরকার এমন বর্বরতা চালাবে? তার দাবি, মানবিক সাহায্য আটকানো, শরণার্থীদের উপর নজরদারি, নিম্নমানের খাদ্য এবং তথ্য গোপনের এই অভ্যাস গণতান্ত্রিক দেশের পরিপন্থী।


বিরোধী দলনেতার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, মানবাধিকারের এই চূড়ান্ত লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আমি আদালতের দ্বারস্থ হব। তাঁর দাবি, অবিলম্বে শরণার্থীদের মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। খাবার, চিকিৎসা, নিরাপত্তা এবং বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের দেওয়া ত্রাণ সামগ্রী শিবিরে গ্রহণ ও বণ্টনের বিষয়টিও প্রশাসনের স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করা উচিত। এই অভিযোগ সামনে আসতেই রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক ছড়িয়েছে। তবে সরকারি ভাবে এই বিষয়ে কোনো বিবৃতি মেলেনি।

14:17