এবার ট্রাম্পের কোপে বিদেশী চলচিত্র, শুল্ক বসতে চলেছে একশো শতাংশ

Published By Subrata Halder, 05 May 2025, 03:04 pm

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
আমেরিকায় প্রদর্শিত বিদেশী সিনেমার উপরে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত নয় এমন সিনেমার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিকে
দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্পের মত, আমেরিকার সিনেমা শিল্প দ্রুত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এই কারনেই তিনি এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছেন, বলে দাবি বিবিসির।
হলিউড ছবির এই অবস্থার জন্য তিনি অন্য দেশগুলির ‌সমন্বিত প্রচেষ্টা কে দায়ী করে বলেন, তারা সিনেমা নির্মাতা ও স্টুডিওগুলোকে নানা ধরনের প্রণোদনা অফার করছে এবং সেটি আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পরোক্ষ হুমকি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সমাজ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, তার সরকার আমেরিকায় তৈরি সিনেমাকে আবার মহান করতে চাই।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন। তার যুক্তি হলো, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বাড়াবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। যদিও এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতি এক ধরনের নিরাশা দেখা দিয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই ট্রাম্প তিন চলচ্চিত্র তারকা জন ভইট, মেল গিবসন ও সিলভেস্টার স্টালোনকে বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ করেছেন । যাদের কাজ হলো হলিউডের ব্যবসার সুযোগকে বাড়ানো। ট্রাম্পের মতে, হলিউড মহান একটি জায়গা কিন্তু এখানে অনেক সমস্যা আছে। ওই তারকারা সরকারের দূত হিসেবে কাজ করবেন, যার উদ্দেশ্য হলো হলিউডকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা যেটা গত চার বছরে ব্যাপক ব্যবসা হারিয়েছে। বৃহৎ, ভালো এবং আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।
সিনেমা শিল্প গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রডপ্রোর মতে, বৈশ্বিক নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমেরিকাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিনেমা তৈরির কেন্দ্র। এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে দেখা গেছে, দেশটি গত বছর সিনেমা তৈরিতে প্রায় সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ২৬ শতাংশ কম।
বিপরীতে এই খাতে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা ও যুক্তরাজ্য ওই একই সময়ে আরও বেশি বিনিয়োগ পেয়েছে বলে রিপোর্টে দাবী করা হয়েছে। গত এপ্রিলে চীন বলেছে, তাদের দেশে আমেরিকান সিনেমার প্রবেশের জন্য যে কোটা ঠিক করা আছে, সেটি তারা কমিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চীনের সিনেমা প্রশাসন বলছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের শুল্কের অপব্যবহারের ভুল সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই আমেরিকান সিনেমার দর্শক কমাবে। তাদের দাবী চীন বাজার নীতি অনুসরণ করবে দর্শকের পছন্দকে সম্মান দেবে এবং ধীরে ধীরে আমেরিকান ফিল্ম আমদানি কমাবে।
ট্রাম্প শুল্ক ব্যবহার করে চীনের ওপর কঠিন আক্রমণ করেছেন। চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। প্রশাসনিক মতে, কিছু চীনা পণ্যে শুল্ক ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
অন্য দেশগুলো এখন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ শতাংশ শুল্ক মোকাবিলা করছে। এর চেয়ে বেশি শুল্ক জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা আছে। ৪ ঠা মে, বিমানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, চীনসহ অনেক দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে কথা বলেছেন।
তবে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। চলতি সপ্তাহে কোনো বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা আসবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হতে পারে। তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।
এর আগে চীনের ওপর শুল্ক কমিয়ে আনারও ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, এক পর্যায়ে আমি এটি কমিয়ে আনবো। কারণ এটা ছাড়া আপনি তাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবেন না। আর তারা ব্যবসা করতে চায়।

23:45