প্রবল চাপে বাংলাদেশের ইউনুস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার

Upcoming Bangladesh election to set democratic milestone: Yunus

Published By Subrata Halder, 27 May 2025, 04:36 p.m.

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস
দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেই সোমবার অন্তর্বর্তী এক নির্দেশিকা জারি করলেন। সরকারের জারি করা এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীরা আন্দোলন শুরু করেছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও তাতে সামিল হয়েছেন, সংবাদ সংস্থা রয়টার্স
এই খবর জানিয়েছে।
২০২৪ সালের আগস্ট মাসে ১৭ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন ৮৪ বছর বয়সী নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তিনি এখনো ভারতেই আছেন।
সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে দেশে সংস্কারের চেষ্টা করছে ইউনূস প্রশাসন। কিন্তু এরই মধ্যে বেসামরিক কর্মচারী, শিক্ষক, রাজনৈতিক দল এবং সামরিক বাহিনীর চাপের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাকে।
এমন পরিস্থিতিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে দীর্ঘ প্রক্রিয়া ছাড়াই অসদাচরণের জন্য সরকারি কর্মচারীদের বরখাস্ত করার সুযোগ দিয়ে রবিবার একটি অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এই অধ্যাদেশকে ‘দমনমূলক’ আখ্যা দিয়ে তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার টানা তৃতীয় দিন বিক্ষোভ চালাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। অন্যদিকে বেতন বাড়ানোর দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষক সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
এর আগে রবিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে রাজস্ব সংস্থা ভেঙে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি বিভাগ স্থাপনের আদেশ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপরেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
গত সপ্তাহে শীর্ষস্থানীয় এক ছাত্রনেতা জানান, সংস্কার ও নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হতে না পারলে পদত্যাগ করতে পারেন অধ্যাপক ইউনূস। এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও তীব্র হয়। যদিও ইউনূস সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না। শনিবার তিনি বলেন, আমাদের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোথাও যাচ্ছি না। পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, অধ্যাপক ইউনূস প্রতিবন্ধকতাগুলো স্বীকার করেছেন, কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
দ্রুত সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করা এবং সংস্কার শেষ করা দুই পক্ষের এসব দাবির মধ্যে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছে।
এরই মধ্যে গত সপ্তাহে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন হওয়া উচিত। এই মন্তব্যের পর চাপ আরও বাড়ে ইউনুসের উপরে। শনিবার উপদেষ্টা পরিষদের একটি বৈঠক হয়। একই দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্র নেতৃত্বাধীন জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন মুহাম্মদ ইউনুস। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও তার সঙ্গে দেখা করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম রবিবার বলেন, আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতে আছি। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর বিভিন্নভাবে আমাদের অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বাধীন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন চলতি মাসে স্থগিত করা হয়েছে। যার ফলে তারা আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না।
তবে তাতে থেমে থাকছে না আওয়ামী লীগ।

04:35