জানেন কি অতিরিক্ত শসা খেলেও বিপদ হতে পারে।
ওজন কমানোর জন্যে কমবেশি সবাই সালাড হিসেবে শসা খান। শুধু ওজন কমানো নয়, শরীর ঠান্ডা রাখতেও শসা দুর্দান্ত কার্যকরী এক সবজি। তবে অতিরিক্ত শসা খেলে তার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াও আছে ।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণা জানাচ্ছে , নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি যদি শসা খান তবে ত্বকের চুলকানি, সাইনোসাইটিস সহ নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। শসা শরীরের জন্য যেমন উপকারী তেমনই এটি কারও কারও ক্ষেত্রে ক্ষতিকরও হতে পারে।
অতিরিক্ত শসা খেলে কী হয়?
অধিক তরল জাতীয় ক্ষতিকর
শসার বীজ কিউকারবিটিনের উৎস। এই উপাদান মূত্র বাড়িয়ে তোলে তাই প্রচুর পরিমাণে শসা খেলে শরীর থেকে অতিরিক্ত জলজ পদার্থ বেরিয়ে যেতে পারে। যা শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটিক ভারসাম্যকে বাধা দেয়। ফলে ডিহাইড্রেশনের মতো শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
এতেও বিষাক্ত উপাদান আছে
শসার মধ্যে কিউকারবিটাসিন ও টেট্রাসাইক্লিক ট্রাইটারপেনয়েডের মতো টক্সিন আছে। গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে, যে এই উপাদানগুলোই মূলত শাকসবজিতে তিক্ত স্বাদ তৈরি করে। গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পরিমিত মাত্রার চেয়ে বেশি শসা খাওয়া জীবনের জন্য ভয়ানক হতে পারে।
অতিরিক্ত ভিটামিন সি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া ফ্লু ও স্কার্ভিসহ বিভিন্ন রোগের সমাধান করে। এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও বটে। তবে ভিটামিন সি যখন খুব বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা হয় তখন এর অ্যান্টি-অক্সিডেটিভ প্রকৃতির বিরুদ্ধে প্রো-অক্সিডেন্টের মতো কাজ করে। ফলে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেল বেড়ে যেতে পারে। যা ক্যানসার, ব্রণ ও অকাল বার্ধক্যের কারণ।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়ায়
শরীরে অতিরিক্ত পটাসিয়ামের উপস্থিতির কারণে হাইপারক্যালেমিয়া হয়। এটি প্রাথমিকভাবে পেটের ফোলাভাব, ব্যথা ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে । সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবস্থার আরও অবনতি ঘটে ও কিডনিতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ফলে রেনাল সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
ওরাল ও স্কিন এলার্জি
আমেরিকান একাডেমি অফ অ্যালার্জি অ্যাজমা অ্যান্ড ইমিউনোলজির এক গবেষণা অনুসারে, সবুজ চামড়ার সবজি কাঁচা খাওয়ার পর অনেকেই অ্যালার্জি অনুভব করতে পারেন । যদিও রান্না করা বা গ্রিল করা শসার ক্ষেত্রে এ সমস্যা হয় না।
হার্টে চাপ সৃষ্টি করে
শসায় ৯০ শতাংশেরও বেশি জল থাকে। যত বেশি জল খাওয়া যাবে রক্তের পরিমাণও তত বেশি হবে। এর ফলে রক্তনালি ও হৃদপিণ্ডের উপর চাপ বাড়ে । ফলে হার্ট ও রক্তনালিতে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে । জলের অত্যধিক উপস্থিতি রক্তের ইলেক্ট্রোলাইট স্তরে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে, যা আসলে কোষের ক্ষয়ের কারণ। এটি ঘন ঘন মাথাব্যথা ও শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টি করে ফলে মানব জীবনে অসুবিধার সৃষ্টি হয় ।
পেট ফাঁপা
শসায় থাকা কিউকারবিটাসিন নামক উপাদান কারও কারও ক্ষেত্রে বদহজমেরও কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে পেট ফুলে যাওয়া, পেট ফাঁপাসহ ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। যদি পেঁয়াজ, বাঁধাকপি অথবা ব্রকোলি খেলে পেটে অস্বস্তি হয় তাহলে শসা খাওয়াও কমিয়ে দিন ।
সাইনোসাইটিসের সমস্যা বাড়ায়
যদি আপনার সাইনোসাইটিস বা কোনো ধরনের দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা থাকে, তাহলে ভুলেও বেশি শসা খাবেন না । আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের মতে, এই সবজির ঠান্ডা প্রভাব এ ধরনের অবস্থাকে আরও বাড়িয়ে তোলে, যা জটিলতার সৃষ্টি করে ।
যদিও গর্ভাবস্থায় শসাকে সাধারণত নিরাপদ বলে মনে করা হয়, তবে অনেক গর্ভবতীরা শসা খেলে পেটের অস্বস্তিতে ভুগে থাকেন ।