অনেক মানুষই আছেন যারা ঘুমোনোর সঙ্গে সঙ্গেই নাক ডাকতে শুরু করেন। প্রত্যেকের মধ্যেই আছে। তবে যিনি নাক ডাকেন তিনি তা মোটেও টের না পেলেও পাশে যে ঘুমান তার বেশি অসুবিধা সৃষ্টি হয়। আসলে নাক ডাকার সমস্যাটি তখনই ঘটে, যখন গলার শিথিল টিস্যুগুলোর উপর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হয়। ফলে শ্বাস নেওয়ার সময় টিস্যুগুলো কাঁপতে থাকে।
এই নাক ডাকার সমস্যা বিভিন্ন কারণেই হতে পারে, যেমন- সাইনাসের সমস্যা, মদ খাওয়া , অ্যালার্জি, ঠান্ডা লাগা ও অতিরিক্ত ওজন। জীবনধারার পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে অতি সহজেই মুক্তি পাওয়া যায় । এছাড়া মেডিকেল ডিভাইস ও সার্জারির মাধ্যমেও নাক ডাকার সমস্যা কমানো সম্ভব ।
কী কারণে মানুষ নাক ডাকে ?
অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ) নামক একটি ঘুমের ব্যাধির কারণে মানুষের দীর্ঘস্থায়ীভাবে নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে। সব নাক ডাকার কারণ যে ওএসএ তা নাও হতে পারে। কয়েকটি লক্ষণ অবশ্যই আছে যা অনুভব করলে আপনি বুঝতে পারবেন যে ওএসএ নামক ব্যাধিতে ভুগছেন কি না। জানুন লক্ষণগুলো-
১. ঘুমের সময় শ্বাসকষ্ট
২. দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম
৩. মনোযোগ দিতে অসুবিধা
৪. সকালে মাথাব্যথা
৫. ঘুম থেকে উঠেই গলা ব্যথা
৬. ঘুমের মধ্যে অস্থিরতা
৭. রাতে হাঁপানি বা দম বন্ধভাব
৮. উচ্চ রক্তচাপ
৯. রাতে বুকে ব্যথা ইত্যাদি।
নাক ডাকার অতিমাত্রার লক্ষণ ও শ্বাসকষ্ট দেখেই বেশিরভাগ সময় ওএসএ নির্ণয় করা যায় । অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের রাতে অজান্তেই বারবার ঘুম ভেঙে যায় এবং সেই কারণেই সারাদিন ক্লান্তবোধ করেন তারা।
ডাক্তার দেখাবেন কখন?
উপরের লক্ষণগুলোর যদি আপনার মধ্যে কোনোটি একটিও থাকে, তাহলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এসব লক্ষণ থেকে বোঝা যায় যে, আপনার নাক ডাকা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ) এর সঙ্গে সম্পর্কিত।
আপনার শিশুও যদি নাক ডাকে, তাহলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখান। শিশুদেরও ওএসএ থাকতে পারে। নাক ও গলার সমস্যা- যেমন বর্ধিত টনসিল ও স্থূলতার কারণে শিশুর শ্বাসনালি ছোট হয়, ফলে শিশুদের মধ্যে ওএসএ ব্যাধি হতে পারে।
এই রোগ অবহেলা করলে ঘুমের মধ্যে দম আটকে মৃত্যুও ঘটতে পারে তাই এ রোগ দ্রুত নির্ণয়ের পাশাপাশি সঠিক চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন। পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনযাপনে আনতে হবে পরিবর্তন তবেই নাক ডাকা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।