পীযূষ চক্রবর্তী,
স্বয়ং সুপ্রিম কোর্ট বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে এখন আর অবৈধ বলছে না। ফলে অনেক রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, ক্রীড়াবিদ, অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে অধ্যাপক সেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। আবার এদের মধ্যে অনেকেই টাকার পিছনে ছুটতে গিয়ে বেআইনি কাজে নাম লেখাচ্ছেন। কেউ হয়তো পরোক্ষে কেউ বা প্রত্যক্ষভাবে বেআইনি কাজকে সমর্থন করে অপরাধ করে ফেলছেন। বিনিময়ে হয়তো জুটছে প্রচুর টাকা। কিন্তু সেই টাকা নিজের বা নিজের পরিবারের কারো নামে রাখতে অনেকেই দ্বিধাবোধ করে থাকেন। তবে অনেকেই সেই টাকার জোরে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। স্ত্রী বা স্বামী থাকতেও অনেকেই হাঁটুর বয়সী প্রেমিক-প্রেমিকার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন। অবৈধভাবে উপার্জন করা সেই টাকা নিজের বহির্ভূত সম্পর্কে খরচ করছেন।
সম্প্রতি হুগলির চণ্ডীতলা থানার ওসি জয়ন্ত পাল গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরপরই তার অবৈধ সম্পর্ক উঠে এসেছে। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই জয়ন্ত গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট না হলেও অর্থই যে তার অনর্থের অন্যতম কারণ তা অবশ্য নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। কারণ হাওড়ার সাঁকরাইলের বাসিন্দা ওই বান্ধবীর পিছনে চণ্ডীতলার ওসি যে বিপুল টাকা খরচ করতেন তা একপ্রকার নিশ্চিত গোয়েন্দাদের কাছে। আর সেই টাকা যে বৈধ ছিল না তাও মোটামুটি গোয়েন্দাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
তবে জয়ন্ত একা নন, এর আগে বহু মহারথী অর্থের পিছনে ছুটতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা সর্বজনবিহিত। দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া পার্থর বেআইনি উপার্জনের একটা বড় অংশ তার বান্ধবী অর্পিতার নামে ছিল। অর্পিতার বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছিল পার্থর বিপুল টাকা। একই কথা প্রযোজ্য আর এক রাজনীতিবিদ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও। নারদা কাণ্ডে অভিযুক্ত শোভনও বিবাহিত হয়েও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। স্ত্রী রত্নার সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা চললেও আর এক বিবাহিত মহিলা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন।
সিনেমা জগতেও অর্থের পিছনে ছুটতে গিয়ে বেআইনি কাজে নাম জড়িয়ে যায় অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নির। একইভাবে অর্থের পিছনে ঘুরতে গিয়ে জীবনে অনর্থ ডেকে এনেছেন ক্রিকেটার মহম্মদ আজহারউদ্দিন, মহম্মদ আসিফ, হ্যান্সি ক্রোনিয়ে, অভিনেতা তাপস পাল সহ বহু বিশিষ্টজন।
তাই জয়ন্তর ঘটনার পর একটা কথা পরিষ্কার, ‘প্রেমে পড়া বারণ’।
লোভে পাপ, পাপে বন্ধ হল কামাইয়ের ঝাঁপ
