দ্বিতীয় দফার বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনেই সভায় তুমুল গন্ডগোল, মার্শাল ডেকে বার করে দেওয়া হলো বিজেপি বিধায়কদের, সাসপেন্ড ১

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
বিধানসভায় কাট মোশনের ওপর আলোচনায় নজিরবিহীন টানাপোড়েন। মেদিনীপুরের বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় এর বক্তব্য রাখার সময় মাইক বন্ধ করে দিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিবাদে বিধানসভা উত্তাল হয়। বিধানসভার মধ্যেই স্লোগান শাউটিং শুরু করে বিরোধী বিজেপি বিধায়কেরা। এই অবস্থায় পরিস্থিতি ক্রমশই উত্তপ্ত হতে থাকে দেখে প্রথমে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী সদস্যদের সাবধান করেন। তারপরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় মার্শাল ডেকে দুই বিধায়ক শংকর ঘোষ এবং মনোজ ওরাওকে বিধানসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়। যখন মার্শাল এই উদ্যোগ নিচ্ছে বিজেপির তরফ থেকে সরাসরি বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন বিধায়কেরা। বিধানসভা থেকে বেরোনোর সময় বিধায়কের ডেস্কএ থাকা কাগজ ছিড়ে ছুঁড়ে দেওয়ার জন্য সভার দ্বিতীয় পর্যায়ের বাজেট অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করা হলো বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মনকে।
বিজেপি বিধায়কেরা বিধানসভা থেকে বেরিয়ে সরাসরি বিধানসভার বাইরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে বিজেপি বিধায়ক হিরন বলেন,
২০১৫ সালে রাইট টু পাবলিক সার্ভিস বলে একটি আইন পাস করা হয়েছিল রাজ্য বিধানসভায়। এই দপ্তরের মাধ্যমে প্রত্যেক বছরেই কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। সেই কমিশনে তালা ঝুলছে। সেখানে কোন কাজ হয় না গত 10 বছরে একটি অভিযোগ ও জমা পড়েনি। সরাসরি বিধানসভার ভেতরে এই নিয়ে প্রশ্ন করার জন্যই আমার মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি আরো বলেন এবারই প্রথম নয়, সিএজি দিয়ে বলার কারণে ২০২৩ সালে আমার মাইক বন্ধ করে দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার। এবার দ্বিতীয়বার আমার বাইক বন্ধ করে দেওয়া হল।
এদিন তার কাছে প্রশ্ন করা হয় তার কোন বক্তব্য বাতিল করে দেয়া হয়। বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে হিরন বলেন, অধ্যক্ষ বলছিলেন তোমার এইসব বলে লাভ নেই। আমি সরাসরি তাকে বলি আপনি এসব কথা আমাকে বলতে পারেন না। আমার কিসে লাভ হবে বা হবেনা সেটা আপনি ডিরেকশন দিতে পারেন না। আমি যেমন জনগণের দ্বারা নির্বাচিত আপনিও জনগণের দ্বারাই নির্বাচিত হয়েছেন। কনস্টিটিউশন এর শপথ নিয়েই আপনি অধ্যক্ষ হয়েছেন আর আমি একজন বিধায়ক হয়েছি। আমার অধিকার রয়েছে কথা বলার। আপনি এটা বলতে পারেন না যে এই বিষয়ে আমার লাভ হবে এতে নয়। প্রসঙ্গত এরপরই তিনি বলেন অধ্যক্ষ মাইক বন্ধ করে দেন।
যদিও বিধানসভার অন্তরে অধ্যক্ষ নিজে কি কারণে হিরনের মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তার সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অধ্যক্ষ বলেন, বিধানসভার মধ্যে মাননীয় বিধায়ক যে ধরনের বক্তব্য রাখছিলেন তা বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়, এবং যা খুশি তাই বলছিলেন। সেই কারণেই তার মাইক বন্ধ করা হয়েছে। তার বলা বিতর্কিত বক্তব্য গুলি রেকর্ডে হবেনা সেই নির্দেশ জারি হয়েছে। অধ্যক্ষ জানিয়েছেন রুম বুক ৩৫৫ নম্বর ধারা অনুসারে অধ্যক্ষের সম্পর্কে বলা তার বক্তব্য ডিফামেটারী বা অপমানজনক। সে কারণেই তার বক্তব্য গুলিকে রেকর্ড থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিন নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও বিজেপি বিধায়কদের হাউস ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কড়া সমালোচনা করেছেন। তার বক্তব্য প্রত্যেকেরই একটা সীমার মধ্যে থাকা উচিত এমন কিছু বলা বা করা উচিত না যা বিধায়ক হিসাবে সম্মানজনক নয়।