দিল্লী ও মহারাষ্ট্র মডেল বানচাল করে ২৬ এ জয়ের রাস্তা দেখাচ্ছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
কংগ্রেস সহ অন্য রাজনৈতিক দল যখন ভুয়ো ভোটার নিয়ে অভিযোগ তোলা ছাড়া তেমন কিছুই করতে পারেনি। তবে আটঘাট বেঁধে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই শুধু নয়, খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন তারা। শনিবার ক্যামাকস্ট্রিট থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর দেওয়া মহারাষ্ট্র এবং দিল্লী ভোটকে নিয়ে তথ্যাবলী থেকেই বোঝা যাচ্ছে বিষয়টি কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তারা। এদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় দলীয় কর্মীদের একটা বড় অংশের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ও অভিষেক। মহারাষ্ট্র আর দিল্লির নির্বাচনকে উদাহরণ তুলে ধরে অভিষেক বুঝিয়ে দেন কেন এই ভুতুড়ে ভোটার ধরার যুদ্ধটা গুরুত্বপূর্ণ। এদিন বৈঠকে মহারাষ্ট্র এবং দিল্লি নিয়ে চমকে দেওয়া তথ্য ও তুলে ধরেন অভিষেক। এদিন তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন কয়েক মাসের জন্য পথে নামা নয়, নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন লড়াই করতে হবে প্রত্যেক কর্মীকে। তবেই জিতবে দল।
দিল্লি এবং মহারাষ্ট্রে কিভাবে ভোটার তালিকায় কারচুপি হয়েছে তার উদাহরণ স্বরূপ যে তথ্যাবলী তিনি তুলে ধরেন তাতে অভিষেক বলেছেন,লোকসভার সাত মাস পরে দিল্লিতে বিধানসভা ভোট হয়েছে। ৪ লক্ষ ১২ হাজার নতুন ভোটার যোগ করেছে। মহারাষ্ট্রতে চার মাসের ব্যবধানে ৩৯ লক্ষ নয়া ভোটার যোগ করেছে। খুব ঠান্ডা মাথায় এই পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাই সবাইকে বলছি অত্যন্ত সাবধানে, ঠান্ডা মাথায় সতর্ক হয়ে কাজ করবেন। ৭৮টি এমন বিধানসভা আছে মহারাষ্ট্রতে যেখানে ১৮ লক্ষ নতুন ভোটার যোগ হয়েছে। যার মধ্যে ৬৮টি বিধানসভায় বিজেপি জিতেছে। এটা কাকতালীয় হতে পারে না।
এখানেই শেষ নয় তিনি আরো তথ্য দিয়ে বলেন, অরবিন্দ কেজরীওয়াল চার হাজার ভোটে হেরেছেন। ওনার বিধানসভায় ৩৫ হাজার ভোটারের নাম বাদ গিয়েছিল। এটা আম আদমি পার্টি ভোটের পরে ধরতে পেরেছে। তার আগে বিজেপি কারচুপি করে ফেলেছে। আমরা কারচুপি ধরে ফেলেছি। এর আগে বাংলাকে টাকা দিয়েছে বলেছিল। কিন্তু যেই তথ্য প্রকাশ করতে বলেছি, সেটা পারেনি। বিজেপির প্ল্যান ২৫ লাখ ভোটারের নাম কেটে আরও ২৫ লাখ যোগ করার। বিজেপির পরিকল্পনা হচ্ছে ভোটার ২৫ লাখ বাদ দেবে। কমিশনে আমাদের দাবি কোন কোন নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেল আর কাদের নাম যোগ হল, সেই তালিকা বের করুন। সেটা করে না। আমরা কারচুপি ধরে ফেলেছি৷
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করেছেন, যদি ভোট যুদ্ধে বিজেপির বিরুদ্ধে জয় পেতে হয় তাহলে যে কোন মূল্যেই হোক ভুতুড়ে ভোটার খোঁজার লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে। সাধারণত মনোনয়ন জমা দেওয়ার ১০ দিন আগে পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন করা যায়। কাজেই এখন থেকে পথে নেমে দুদিন দৌড়ঝাঁপ করে শীত ঘুমে চলে গেলে চলবে না। এক্ষেত্রে তৃণমূল কর্মীদের নিরবিচ্ছিন্নভাবে ভোটার তালিকা নিয়ে তৈরি থাকতে হবে। এদিন অভিষেক টাউন সুপারভাইজার এবং পঞ্চায়েত সুপারভাইজার নামে দুটি পদ তৈরি করেন। যারা ভুতুড়ে ভোটার ধরার এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ অংশ নেবেন, এবং এক্ষেত্রে যে বুথগুলিতে অল্প ব্যবধানে বিজেপি হেরেছে অথবা জিতেছে সেগুলিকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা ভুতুড়ে ভোটার খোঁজার লড়াইয়ে কোনভাবে মাথা গরম করলে চলবে না। এগোতে হবে মাথা ঠান্ডা রেখে উপদেশ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের।