এবার ক্যানিং থেকে গ্রেফতার পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্করের সক্রিয় সদস্য

দিন কয়েক আগেই বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিমের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল অসম পুলিশ। মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে আব্বাস আলি ও মিনারুল শেখকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার রাজ্য পুলিশের এসটিএফের জালে ধরা পড়ল আরও এক জঙ্গি জাভেদ আহমেদ মুন্সি। এদিন তাকে ক্যানিংয়ে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ ও রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ। কাশ্মীরের শ্রীনগরের তানপুরার বাসিন্দা জাভেদ বেশ কয়েকদিন ধরে ক্যানিংয়ে এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। সে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের পাশাপাশি সম্প্রতি বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলার হয়েও এদেশে কাজ করছিল। পশ্চিমবঙ্গে সংগঠনের পাশাপাশি নাশকতা ঘটানোর দায়িত্ব পালন করছিল সে। তবে জাভেদ আরও কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের হয়ে কাজ করছিল বলে ধৃতকে জেরা করে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
জানা গিয়েছে, ১৯৯০ সালে কাশ্মীরে মাথাচাড়া দেয় একটি নতুন জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-উল-মুজাহিদিন। তাদের লক্ষ্য ছিল ‘কাশ্মীরের স্বাধীনতা’। শুরু হয় একের পর এক সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ। গ্রেনেড হামলা থেকে শুরু করে অস্ত্র ছিনতাই ও হিজবুল মুজাহিদিন ও লস্কর-ই-তৈবার মতো জঙ্গি সংগঠনগুলিকে সহায়তা সহ সব কাজই করত এই জঙ্গি সংগঠন। কেন্দ্র সরকার ২০১৯ সালে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সেই জঙ্গি সংগঠনেরও একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিল জাভেদ। সে সংগঠনের সদস্যদের পাকিস্তানে পাঠাত। ওই সদস্যরা তেহরিক-উল-মুজাহিদিন জঙ্গি সংগঠনের জঙ্গিদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিত। সে নিজেও একাধিকবার পাকিস্তানে গিয়েছিল বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। দক্ষ সংগঠকের পাশাপাশি সে অস্ত্র চালানোতেও পারদর্শী ছিল। ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) পরিচালনা সংক্ৰান্ত ট্রেনিং সে পাকিস্তান থেকে নিয়েছিল। আইইডি এক্সপার্ট জাভেদ ক্যানিংয়ে কাউকে সেই প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
এসটিএফ সূত্রে খবর, ২০১১ সালে আহল-ই-হাদিসের নেতা শওকত শাহের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল সে। একাধিক সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে সে যুক্ত ছিল। বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হয়ে তাকে জেলেও যেতে হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় নাম ছিল জাভেদের। সে পাকিস্তানের পাশাপাশি নেপাল ও বাংলাদেশেও একাধিকবার গিয়েছে। তবে প্রতিবারই জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করেছে বলে তদন্তকারীদের কাছে স্বীকার করেছে সে। সে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর ই তৈবার হয়েও কাজ করছিল। ভারতের একাধিক জায়গায় নাশকতা ঘটানোর উদ্দেশ্য ছিল তার বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।