Published By Subrata Halder, 06 May 2025, 06:59 pm
বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
পশ্চিমবঙ্গের পূর্বপ্রান্তে বাংলাদেশ, সহ তিনটি দেশের সীমান্ত যুক্ত রয়েছে। যুদ্ধ শুরু হলে এই রাজ্যের উপর আক্রমণের সম্ভবনা বেশি। নেমে আসতে পারে বড়সড় সংকট। তাই দ্রুত রাজ্যকে সর্বস্তরের প্রস্তুতি সেরে নিতে বলল কেন্দ্র। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ডাকা বৈঠকে রাজ্যের প্রতিনিধিদের সর্বত প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল থেকে সাত দিন সমস্ত ব্যবস্থাপনা গুছিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে যেখানে ত্রুটি রয়েছে সেগুলি দ্রুত সংশোধন করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত এদিনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই যুদ্ধ ও নিজেদের ঘরোয়া পরিকাঠামোর প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এনডিআরএফে-এর অধিকর্তা, রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের সচিব রাজেশ সিনহা, সিভিল ডিফেন্সের ডিজি জগমোহন। বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়, যুদ্ধ শুরু হলে কিভাবে উদ্ধারকাজ বা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে রাজ্যকে। এই উদ্দেশে মকড্রিলের কথা বলা হচ্ছে। রাজ্যের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই মকড্রিলের সঙ্গে সরাসরি সাধারণ মানুষের কোন যোগ নেই। বরং এর সঙ্গে অনেক বেশি জড়িত অসামরিক বিভিন্ন ব্যবস্থা যেমন অ্যাম্বুলেন্স, অগ্নি নির্বাপন, উদ্ধার কর্মী দল, হাসপাতালের বেড প্রভৃতি। সবকিছু কতটা সচল আছে সবটাই ঝালিয়ে নেওয়ার জন্যই এই ব্যবস্থা।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে রাজ্যের ১৭ টি জেলাকে অতি স্পর্শকাতর উল্লেখ করা হয়েছে। কোথায় কোথায় মকড্রিলের করা হবে সবটাই নির্ভর করবে রাজ্য সরকারের উপর। কারণ যে কোনো ঘটনা ঘটলে উদ্ধার কাজ করতে হবে তাদের, তাই এক্ষেত্রে প্রশাসন কতটা প্রস্তুত সেটাই ঝালিয়ে নেওয়ার সময় এটা। এই সাত দিনের মধ্যে সামগ্রিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখে নিজেদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে হবে।
এখনো পর্যন্ত প্রশাসনিক সূত্রে যতদূর জানা গিয়েছে এই মুহূর্তে রাজ্যে বিভিন্ন প্রান্তে জেলা ধরে ধরে একাধিক সাইরেন রয়েছে। শুধু শহর কলকাতায় সাইরেন রয়েছে ৯৫ টি। তবে এর বড় অংশ দীর্ঘদিন অবব্যবহারের ফলে অকেজ হয়েছিল। সেগুলিকে দ্রুত সারিয়ে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবার জেলা ধরে বিচার করলে প্রত্যেক জেলায় কুড়ি থেকে ২৫ টি করে সাইরেন রয়েছে। তারমধ্যে প্রত্যেক জেলার হেড কোয়াটারে একটি সাইরেন থাকছে।
ওই আধিকারিক আরো জানিয়েছেন এই মুহূর্তে রাজ্যজুড়ে ৬২টি স্যাটেলাইট ফোন রয়েছে। রাজ্যের সঙ্গে সিভিল ডিফেন্সের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হবে এয়ারফোর্স। এয়ারফোর্সের মাধ্যমেই খবর আসবে সিভিল ডিফেন্সের কাছে। এরপর সিভিল ডিফেন্স থেকে অন্যান্য সর্বত্র সেই খবর বা সাবধানবাণী পৌঁছে দেওয়া হবে। সেই মতো পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দ্রুত প্রত্যেক জেলা ধরে ধরে কন্ট্রোল রুম তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। যেগুলি সকাল থেকে রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করবে।বর্ষার কথা মাথায় রেখে মে মাস থেকেই রাজ্যে এই ধরনের কন্ট্রোলরুম চালু হয়ে যায়। আপাতত সেগুলিকেই যুদ্ধ হলে উদ্ধার কাজ ও বিপর্যয় মোকাবিলায় ব্যবহার করা হবে।
নবান্ন সূত্রে খবর আপাতত রাজ্যের হাতে রয়েছে সাত দিন। সেখানে পরিকাঠামোগত খামতি থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সমস্তই জোগাড় করতে হবে রাজ্যকে। সেটাই আদতে হবে মকড্রিল। যুদ্ধের সময় সাধারণ মানুষকে রক্ষার পদ্ধতি। আপাতত প্রথম প্রস্তুতি আগামীকাল বিকেল চারটে। তবে কোথায় কোথায় হবে? এখনই প্রশাসনের তরফ থেকে সেই সংখ্যাটা বলতে চাইছে না।