একদিকে বাংলাদেশে মৌলবাদীদের উস্কানিতে ভারতবিদ্বেষ বাড়ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের জঙ্গিরা ভারতে প্রবেশ করে নাশকতা ঘটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে আল কায়দার শাখা সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিমের (এবিটি) এরাজ্যে সক্রিয়তা দুশ্চিন্তায় ফেলেছে পুলিশকে। পশ্চিমবঙ্গ, অসম, কেরল থেকে আট জঙ্গিকে গ্রেফতার করার পর পুলিশের সন্দেহ এবিটি-র বহুদূর বিস্তৃত।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, শিলিগুড়ির চিকেনস নেকই ছিল আল কায়দার শাখা সংগঠনের টার্গেট। বাংলাদেশের জেল থেকে পলাতক জঙ্গিরা ভারতে চলে আসতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। আনসারুল্লা বাংলার জাল সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিল অসম ও বাংলায়। তবে অসম পুলিশের ‘অপারেশন প্রঘাত’ ওই জঙ্গিদের বড় ধাক্কা দিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে জঙ্গিকে। মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে মণিরুল শেখ, মহম্মদ আব্বাস আলি।
পুলিশ সূত্রে খবর, নভেম্বরে ভারতে অনুপ্রবেশ করে মহম্মদ শাদ রদির। এবিটি-র অন্যতম মাথা এই শাদ রদিকে কেরল থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাংলাদেশের রাজশাহির বাসিন্দা এই জঙ্গি আনসারুল্লা বাংলার প্রধান, জসিমউদ্দিন রহমানির ঘনিষ্ঠ ইসরাতের নির্দেশেই ভারতে অনুপ্রবেশ করে। কেরল, অসম এবং বাংলায় চুপিসারে সংগঠন গড়তে থাকবে সে।
মূলত, অসম ও বাংলায় স্লিপার সেল তৈরির ছক কষছিল ধৃত জঙ্গিরা। শাদ রদিকে ভারতে সংগঠন তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার সঙ্গে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গির যোগাযোগ ছিল। পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে চারটি পেনড্রাইভ, বাংলাদেশি সার্টিফিকেট-সহ একাধিক ভারত বিরোধী নথি।
এবিটি-র পরিকল্পনা ছিল বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে খুন করার। অসম পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আরএসএস-র বেশ কয়েকজন প্রথম সারির নেতাকে খুন করার উদ্দেশ্য ছিল জঙ্গিদের। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদ থেকে জঙ্গি গ্রেফতার হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে প্রশাসনের। নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে! শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই বাংলাদেশে একের পর এক জঙ্গিকে মুক্তি দিচ্ছে সেদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি জাল নথি দিয়ে তৈরি পাসপোর্ট বাংলাদেশিদের হাতে যাওয়ার ঘটনাতেও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন প্রশাসন। এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত আট জঙ্গির মধ্যে দুজন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। মহম্মদ আব্বাস আলি হরিহরপাড়ার বাসিন্দা। মগুরার বাসিন্দা মিনারুল শেখ। ১০-১২ বছর বয়সী বাচ্চাদের নিয়ে মাদ্রাসা চালু করেছিল মুর্শিদাবাদে ধৃত দুই জঙ্গি। বাচ্চাদের মগজধোলাই করে ভারতের বিরুদ্ধে ঘৃণা তৈরি করার প্ল্যান ছিল তাদের। এদেশে ওই নাবালকদের ব্যবহার করে নাশকতা ঘটানোই মূল লক্ষ্য ছিল ওই জঙ্গিদের। আর কোন কোন জঙ্গি এই রাজ্যে লুকিয়ে রয়েছে তারও খোঁজ শুরু করেছেন এসটিএফের গোয়েন্দারা।