Published By Subrata Halder, 14 June 2025, 10:50 p.m.
বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
বীরভূমের মহাভারত কি তবে আপাতত বন্ধ অধ্যায় ? কারণ
তৃণমূল কংগ্রেসের দুই দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব মেটাতে শেষমেশ হস্তক্ষেপ করলেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শনিবার ভবানীপুরে দলের কার্যালয়ে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মুখোমুখি বসানো হল কেষ্ট ও কাজলকে।
সূত্রের খবর, বৈঠকে ছিলেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও অরূপ বিশ্বাসও। উদ্দেশ্য একটাই একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশের আগে এবং আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে জেলার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ টানা। দলীয় সূত্রের খবর বক্সী ও ফিরহাদ, কেষ্ট ও কাজলকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে, নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য থাকলে আমাদের বলুন, কিন্তু জনসমক্ষে আর নয়। সামনে ভোট, একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। মাথা ঠান্ডা রাখুন।
তবে তৃণমূল নেতৃত্বের এই ‘সংস্কারসভা’র পর দলের কর্মীদের কৌতূহল আরও বেড়েছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণেও একেবারে নীরব কেষ্ট-কাজল। ২১ শে জুলাই বীরভূম থেকে কত সংখ্যক কর্মী কলকাতায় আসবেন ? এমন নিরীহ প্রশ্নেও কোন উত্তর মেলেনি। এক সময়ের অনুব্রত মানে বেফাঁস মন্তব্য, ক্যামেরা দেখলেই বলতেন, বলুন কী জানতে চান। কিন্তু এদিন কেষ্ট যেন অন্য মানুষ। কাজলেরও মুখে কুলুপ। দলের অন্দরেই চাপা গুঞ্জন কী এমন বলা হল বৈঠকে? কেউ কেউ বলছেন, ওরাও বুঝে গেছে, এখন কথা বললেই বিতর্ক তৈরি হবে। তাই চুপ করে থাকাটাই শ্রেয়।
দলীয় সূত্র থেকে যতদূর জানা যাচ্ছে, দুজনকেই নিজের এলাকার বাইরে যেতে বারণ করা হয়েছে। যে যার এলাকায় থাকতে। অন্যের এলাকায় যাবে না। নিজের আচরণের জন্য খুব লজ্জিত নিজেই জানিয়েছেন অনুব্রত। জানা গিয়েছে দুজনের মধ্যে প্রায় ২০ মিনিট বৈঠক হয়েছে। বলা হয়েছে, সামনেই নির্বাচন সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে বারণ করা হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমে তো নয়ই, নির্বাচনের আগে গোটা কোর কমিটিকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে দেয়া হয়েছে স্পষ্ট ভাষায়।
প্রসঙ্গত, ক’দিন আগেই বীরভূম জেলার আইসিকে গালিগালাজ ও হুমকির অভিযোগ উঠেছিল অনুব্রতের বিরুদ্ধে। ভাইরাল অডিওতে তার ভাষা ঘিরে সমালোচনার ঝড় ওঠে। দলের অস্বস্তিও বাড়ে। পরে দলের নির্দেশে অনুব্রত ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দিলেও তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। বিরোধীরা এখনও প্রশ্ন তুলছে, কেন কড়া পদক্ষেপ হয়নি। সেই অনুব্রতই এবার নীরব।
তবে তৃণমূল শিবিরে প্রশ্ন এই শান্তি বৈঠক ও কেষ্ট-কাজলের চুপচাপ মুড কতদিন টিকবে ?
বছর ঘুরলেই রাজ্যের ভোট। তার আগেই দলের ভাঙন রুখতে এখনই লাগাম টানতে চাইছে শীর্ষ নেতৃত্ব। শনিবারের বৈঠক সেই চেষ্টারই অংশ।