পঙ্কজ দত্তের মৃত্যুর জন্য পুলিশকেই দায়ী করলেন বিশিষ্টজনেরা

প্রাক্তন আইপিএস অফিসার পঙ্কজ দত্তের মৃত্যুর ঘটনায় ক্রমেই ক্ষোভ বাড়ছে। যেভাবে বড়তলা থানায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়েছিল তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই ঘটনায় প্রতিবাদীর সংখ্যা বাড়ছে। কলেজ স্কোয়ারের মহাবোধী সোসাইটিতে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে হওয়া সভাতেই সেই ঝাঁজ পাওয়া গেল। প্রত্যেককেই পুলিশের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা গেল।
বরাবরই স্পষ্ট বক্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্ত। বারবার তাঁকে পুলিশ বা সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে। তা সে কামদুনির ঘটনায় হোক বা আরজি কর, সবেতেই পুলিশ বা রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আরজি কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি সরব হতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই পঙ্কজবাবুকেই মাস দেড়েক আগে মহিলাঘটিত একটি মামলায় বড়তলা থানায় ডেকে পাঠানো হয়। প্রায় আট ঘণ্টা তাঁকে সেখানে বসিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ। রীতিমতো দুর্ব্যবহার করা হয় পুলিশের প্রাক্তন কর্তার সঙ্গে। পুলিশের একজন উর্ধ্বতন আধিকারিক হয়েও নিচুস্তরের পুলিশ কর্মীদের দ্বারা যে ব্যবহার তিনি পেয়েছিলেন তাতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তারপরই তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যান।
পঙ্কজবাবুর স্মৃতি উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জায়গাতেই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। মহাবোধী সোসাইটিতে হওয়া কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন সিবিআইয়ের প্রাক্তন কর্তা উপেন বিশ্বাস, প্রাক্তন পুলিশকর্তা সন্ধি মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট চিকিৎসক কুণাল সরকার, বিশিষ্ট শিল্পী সমীর আইচ, বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচি, সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ, আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। প্রত্যেকের মুখেই শোনা গেল পুলিশের ভূমিকা। পুলিশ এখন পুরোপুরি শাসকের কথায় ওঠাবসা করছে বলে মত সকলেরই। একজন প্রাক্তন পুলিশকর্তার সঙ্গে যদি দুর্ব্যবহার করে পুলিশ তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? রক্ষক যদি পক্ষ হয় তাহলে কার কাছে বিচার চাইতে যাবেন সাধারণ মানুষ? এই প্রশ্ন তুলেছেন স্মরণ সভায় যোগ দিতে আসা সমস্ত অতিথিরাই।