
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মোহাম্মদ ইউনূস। হাসিনাকে সরানোর রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে ছাত্র সমাজ। মঙ্গলবার হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরপর মঞ্চ থেকে স্লোগান শুরু হয়। সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনে শহিদ শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান বলেন, ‘আমার ছেলে শাহরিয়ার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আন্দোলনের সময় মীরপুরে শহিদ হয়েছে। আমাদের কান্না কখনো থামবে না, এই বেদনা শেষ হওয়ার নয়।’ তিনি হাসিনা ও তাঁর সরকারের পুলিশ-প্রশাসনকে খুনি বলেও ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘হাসিনা ও তাঁর হেমলেট বাহিনী আমাদের ওপর পাখির মতো গুলি চালিয়েছে। আমরা খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই।’
এদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। এ যেন হাসিনার বিরুদ্ধে গত জুলাইয়ে ছাত্র অভ্যুত্থানের পুনরাবৃত্তি বলা যেতে পারে। বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকার
শহিদ মিনারে জড়ো হন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’তে যোগ দিতে ভোর থেকেই সারা দেশ থেকে ছাত্র-জনতা শহিদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন।
তাঁদের স্লোগানে যেমন হাসিনা ও তাঁর সরকারের মন্ত্রী এবং নেতাদের বিরুদ্ধে চরম ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয় তেমনই কোটা সিস্টেম তুলে দেওয়ার কথাও বলা হয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে স্বাধীনতার জন্য যাঁরা লড়াই করেছিলেন সেই মুক্তিযুদ্ধের পরিবারের উত্তরাধিকারীরা কোটা সিস্টেমের মধ্যে পড়েন। চল্লিশ শতাংশ চাকরি মুক্তিযুদ্ধের পরিবারের উত্তরাধিকারীরা পেয়ে থাকেন। তা তুলে দেওয়ার জন্যই হাসিনা ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে গত জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের ডাক দিয়েছিল বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ। সেই আন্দোলনের জেরেই ক্ষমতাচ্যুত হতে হয় হাসিনাকে। হাসিনা বিতাড়িত হওয়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন ইউনূস। ছাত্র সমাজ ভেবেছিল ইউনূস ক্ষমতা নেওয়ার পর হয়তো কোটা সিস্টেম তুলে দেবেন। তবে এখনও তা না হওয়ায় চাপ তৈরি করতেই ফের পুনরায় আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ছাত্র সমাজ।