শান্তিনিকেতন, ১৪ ফেব্রুয়ারি :
এ বছরও দোলের দিন ১৪ই মার্চ শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব করছে না বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পরিবর্তে ১১ই মার্চ, দোলের আগেই বসন্ত উৎসব পালন করবে শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচ্চ পর্যায়ে বৈঠকের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। বিগত পাঁচ বছর বসন্ত উৎসব হয়নি, শান্তিনিকেতনে। চলতি বছর নিয়ে ছয় বছর দোলের দিন বসন্ত উৎসব হচ্ছে না বিশ্বভারতীতে। সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতীগ ঘোষ।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ঢাকঢোল পিটিয়ে শুক্রবার বসন্ত উৎসব নিয়ে জরুরী বৈঠক করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয় বিজ্ঞপ্তিও।
শুক্রবার বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠক করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয় কুমার সরেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মসসচিব, উৎসব অনুষ্ঠান কমিটির আধিকারিকরা, এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন অধ্যক্ষ ও প্রিন্সিপালরা।
ঘন্টাখানেকের বৈঠক শেষে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতীগ ঘোষ জানান, এবছর বিশ্বভারতী নিজের মতো করে শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব পালন করবে। দোলের দিন ১৪ই মার্চ পরিবর্তে ১১ই মার্চ শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব হবে। এটি বিশ্বভারতীর নিজস্ব উৎসব। খুব স্বাভাবিকভাবেই ছাত্র-ছাত্রী, অধ্যাপক, আধিকারিক, প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের নিয়ে উৎসব উদযাপন হবে।
বিশ্বভারতীর কর্মী পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ রায় বলেন, বসন্ত উৎসব শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর নিজস্ব অনুষ্ঠান। আমরা ১১ ই মার্চ বসন্ত উৎসব পালন করব। দশ তারিখ সন্ধ্যায় গৌড় প্রাঙ্গনে বসন্ত বন্দনা। সেদিন রাত্রি ন’টায় বৈতালীক। ১১ ই মার্চ ভোর পাঁচটায় বৈতালিক, সকাল সাতটায় শান্তিনিকেতন গৃহ থেকে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান শোভাযাত্রা। গৌড় প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে বসন্ত উৎসব। সেদিন রাতেই গৌড় প্রাঙ্গণের মঞ্চে চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী পরিবেশন হবে রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য। বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন শুধুমাত্র বিশ্বভারতী পরিবার।
বিশ্বভারতীতে শেষবার বসন্ত উৎসব পালিত হয় ২০১৯ সালে। তারপর ২০২০-২১ সালে অতিমারি ও ২২-২৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কিছু আভ্যন্তরী কারণে বসন্ত উৎসবের আয়োজন হয়নি। গত বছর ঘরোয়া ভাবে ক্যাম্পাসের মধ্যেই শুধুমাত্র বসন্ত বন্দনার আয়োজন করা হয়। সেখানে দূরদূরান্তের পর্যটক সহ স্থানীয়দের ব্রাত্য থাকতে হয়েছিল।
প্রসঙ্গত,আশির দশকের গোড়ায় আম্রকুঞ্জ থেকে গৌরপ্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয় বসন্ত উৎসবকে। ভিড় বাড়তে থাকায় ২০০৭-’০৮ সালে সেটিরও স্থান পরিবর্তন হয় আশ্রম মাঠে। পরবর্তীকালে সেখান থেকেও পরিবর্তন হয় পূর্বপল্লীর মেলার মাঠ।
শান্তিনিকেতনে বড় দুটি উৎসব পৌষমেলা এবং বসন্ত উৎসব। গত বছর বিশ্বভারতী নিজেরা শান্তিনিকেতন পৌষমেলা পরিচালনা করলেও এ বছর দোলের দিন বসন্ত উৎসব করছেন না। খুব স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র শান্তিনিকেতনে পর্যটন ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে তা বলা বাহুল্য।