অবিশ্বাসী ও বহুনৈষ্ঠিকের হৃদয়ে ভক্তি আসতেই পারে না। ক্লীবত্ব, দুর্ব্বলতা – অনেক সময় ভক্তির খোলস প’রে দাঁড়ায় — তা হতে সাবধান হও।
একটু কাঁদলেই বা নৃত্যগীতাদিতে উত্তেজিত হয়ে লম্ফঝম্ফাদি করলেই যে ভক্তি হল তা নয়কো – সাময়িক ভাবোন্মত্ততাদি ভক্তের লক্ষণ নয়কো। ভক্তের চরিত্রে পাতলা অহংকারের চিহ্ন এবং উদারতা ইত্যাদির চিহ্ন কিছু-না-কিছু থাকবেই থাকবে, নতুবা ভক্তি আসে নাই।
দুর্ব্বল ভাবোন্মত্ততা অনেক সময় ভক্তির মত দেখায় – সেখানে নিষ্ঠা নাই আর ভক্তির চরিত্রগত লক্ষণ নাই।
যার হৃদয়ে ভক্তি আছে সে বুঝতে পারে না যে সে ভক্ত; আর দুর্ব্বল, নিষ্ঠাহীন, শুধু ভাবপ্রবণ গাঢ় অহংযুক্ত হৃদয় ভাবে – আমি খুব ভক্ত।
অশ্রু, পুলক, স্বেদ, কম্পন হলেই যে সেখানে ভক্তি এসেছে তা নয়কো – ভক্তির ঐগুলির সঙ্গে তার স্বধর্ম চরিত্রগত লক্ষণ থাকবেই থাকবে।
অশ্রু, পুলক, স্বেদ, কম্পন ইত্যাদি ভাবের লক্ষণ; তা অনেক রকমের হতে পারে। ভক্তির চরিত্রগত লক্ষণের সঙ্গে যদি ঐ ভাবের লক্ষণগুলি প্রকাশ পায়, তবেই তা সাত্ত্বিক ভাবের লক্ষণ।
জাল-ভক্তি মোটা অহঙ্কারযুক্ত, আসল ভক্তি অহঙ্কারমুক্ত অর্থাৎ খুব পাতলা অহঙ্কারযুক্ত।
জাল-ভক্তিযুক্ত মানুষ উপদেশ নিতে পারে না, উপদেষ্টারূপে উপদেশ দিতেই পারে — তাই কেহ উপদেশ দিলে মুখে চটার লক্ষণ, বিরক্তির লক্ষণ, সঙ্গ-পরিহারের চেষ্টা ইত্যাদি লক্ষণ প্রায় স্পষ্ট প্রকাশ পায়।
আসল – ভক্তিযুক্ত মানুষ উপদেষ্টার আসন নিতে একেবারেই গররাজি। যদি উপদেশ পায়, তার মুখে আনন্দের চিহ্ন ফুটে বেরোয়। ‘সত্যানুসরণ’
“জাল ভক্তি”
