
উনবিংশ শতাব্দীর এক উল্লেখযোগ্য মানুষ মদনমোহন তর্কালঙ্কার। তিনি বাংলা শিশু সাহিত্যের প্রথম সার্থক কবি, প্রথম সার্থক বাংলা প্রাইমারের জনক(শিশুশিক্ষা), স্ত্রী শিক্ষার প্রসার এবং বিধবা বিবাহ প্রবর্তনের অগ্রণী মানুষ। ৩ জানুয়ারি তাঁর জন্মদিন (১৮১৭)। নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানার বিল্বগ্রামে জন্ম। বিদ্যাসাগরের সহপাঠী, অভিন্নহৃদয় বন্ধু, সমাজসংস্কারক এই মানুষটির জন্মদিন উপলক্ষ্যে ধুবুলিয়া কথাশিল্প আবৃত্তি চর্চাকেন্দ্র এক স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক পীতম ভট্টাচার্য বলেন, মদনমোহন সংস্কৃত কলেজে পড়াকালীন মুখে মুখে সংস্কৃত শ্লোক রচনা করতেন। তাঁর শিক্ষক জয়গোপাল তর্কালঙ্কার, প্রেমচাঁদ তর্কবাগীশ তাঁর এই কবিত্বশক্তির অসম্ভব প্রশংসা করতেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই লিখে ফেললেন ভারতচন্দ্রের “রসমঞ্জরী”-র অনুবাদকাব্য “রসতরঙ্গিনী”। তারপরেই লিখলেন সুবন্ধুর কথাকাব্য “বাসবদত্তা”-র অনুবাদ। হিন্দু ল কমিটির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পেলেন “তর্কালঙ্কার” উপাধি।
এর পর বিভিন্ন কলেজে পড়িয়েছেন, কখনও জজ পন্ডিতের চাকরি করেছেন, শেষ জীবনে ছিলেন মুর্শিদাবাদের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। তাঁর লেখা “শিশুশিক্ষা” বইটি দীর্ঘকাল ছোটদের একমাত্র বর্ণ চেনানোর বই ছিল।
তাঁর জন্মস্থান বিল্বগ্রামে জন্মদিন উপলক্ষ্যে কয়েকদিনের উৎসব হয়। বেথুয়াডহরিতে তাঁর দুটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপিত হয়েছে।
এদিনের অনুষ্ঠানে কথাশিল্পর ছাত্রছাত্রীরা তাঁর লেখা কবিতা ও তাঁকে নিয়ে লেখা কবিতার আবৃত্তি পরিবেশন করে।