বীরভূমের মহম্মদ বাজারের গণপুরে মনসা পুজো

Manasa Puja Celebrated in Mohammad Bazar's Ganpur Village

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,

মা মনসা আসেন শশুরবাড়ি থেকে বাপেরবাড়ী। তাও আবার প্রতিবছর নিয়ম করে নয়। নিজের ইচ্ছায় যখন মনে হয় সেই বছর আসেন তিনি। ২০২১ সালে এসেছিলেন মা স্বপ্ন দিয়ে। কিন্তু তারপর তিন বছর মা আসেন নি। এই ২০২৫ সালে আবার এলেন মা। ময়ুরেশ্বর ব্লকের মাঠমহলা গ্রাম হচ্ছে মা মনসার শশুড়বাড়ী। সেই মাঠমহলা গ্রাম থেকে মায়ের মহম্মদ বাজারের গণপুর এর গ্রামে বাপের বাড়িতে আসা।

একদম মাকে মাথায় নিয়ে হাজার হাজার মানুষ এই গ্রাম থেকে ঢাক ঢোল বাজিয়ে মাকে মাথায় চাপিয়ে নিয়ে আসেন। তবে যদি মা স্বপ্নে দেখা দেন পুরোহিতকে নির্দেশ দেন বলেন তবেই কিন্তু মাকে আনতে পারা যাবে নতুবা মাকে তাঁর আসন থেকে আর কোনমতেই তোলাই যাবে না। মাঠমহলা গ্রামের পুরোহিত মাকে মাথায় চাপিয়ে নিয়ে আসবেন গণপুর গ্রামের কাছে। আর সেইখান থেকে গণপুরের গ্রামের পুরোহিত মাকে মাথায় চাপিয়ে নিয়ে আসবেন তাদের গ্রামে। এটাই হয়ে আসছে এই এত বছর ধরে। কিন্তু এই বছর আর সেটা হলো না। মা মাথা থেকে নামলেন না।

হ্যাঁ, গণপুরে এখন জোর কদমে চলছে মা মনসার আরাধনা। গোটা গ্রাম এই মায়ের পুজোয় মেতে উঠেছেন। গ্রামের প্রায় এক হাজার এর বেশি ঘর গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষ নিরামিষ আহার গ্রহণ করে এই পূজোর কটি দিন। চলে হরিনাম কীর্তন আর ভোগ খাওয়া। এই নিয়েই মেতে উঠেছে গণপুর গ্রাম। সাতদিন পর যদি মার ইচ্ছা হয় তাহলে আবার ফিরে যাবেন শ্বশুরবাড়ি সেই মাঠমহলা গ্রামে না হলে নয় দিন, এগারো দিন মা থেকে যাবেন বাপের বাড়ীতে। আর এই ভাবেই মা মনসার আরাধনা করে আসছেন মহম্মদ বাজারের গণপুর এর গ্রাম। বিশ্বাস ভক্তি নিয়ে মার কাছে যা চাওয়া যায় সেটাই মা দেন।

এই বিশ্বাস নিয়েই পূজো করেন গণপুর গ্রামের মানুষেরা। তাঁরা জানেন মা তাঁদের জাগ্রত মা। তাই নিজের ইচ্ছায় আসেন বাপের বাড়ী আবার নিজের ইচ্ছায় চলে যান তিনি। শুধু এই কটা দিন মা আসার কারণে গোটা গণপুর গ্রাম মেতে ওঠে মা মনসার আরাধনায়। ভক্তি বিশ্বাস আর নক নিষ্ঠায় মাকে পূজো করেন এই কটা দিন। কদিন বাদেই যে ঘরের মেয়ে আবার ফিরে যাবে বাপের বাড়ি ছেড়ে শশুড় ঘরে।