আরজি কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসককে কি অন্যত্র খুন করে সেমিনার হলে দেহ রাখা হয়েছিল? সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবের রিপোর্ট (চিএফএসএল) সামনে আসার পর সেই প্রশ্নই উঠছে। পাশাপাশি ওই হাসপাতালের সেমিনার হলে ধর্ষণ ও খুন হওয়া চিকিৎসকের প্রতিরোধের কোনও চিহ্ন মেলেনি। এই রিপোর্টের পর স্বাভাবিকভাবেই তদন্তের মোড় যে অন্য মাত্রা নেবে তা বলাই বাহুল্য।
সিএফএসএল রিপোর্টে বলা হয়েছে, সেমিনার হল তো নয়ই, যে কাঠের পাটাতনের বিছানার উপর নির্যাতিতার দেহ শোয়ানো ছিল, সেখানেও কোনও প্রতিরোধের প্রমাণ মেলেনি।
ঘটনার পর অনেকেই ঘটনাস্থল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। সদ্য প্রয়াত রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্ত সহ বহু বিশিষ্ট মানুষই দাবি করেছিলেন ওই চিকিৎসককে অন্য কোথাও ধর্ষণ ও খুনের পর তাঁর দেহ সেমিনার হলে ফেলে রেখে যাওয়া হয়ে থাকতে পারে। সিএফএসএল রিপোর্ট সেই দাবিকেই ফের মান্যতা দিল বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত ৯ আগস্ট আরজি করের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল অভয়ার দেহ। সেই সময় তদন্তে নেমে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছিল কলকাতা পুলিশ। যার মধ্যে ছিল নির্যাতিতার আই কার্ডও। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তভার পায়। তার আগে উদ্ধার হওয়া জিনিস কলকাতা পুলিশ ল্যাবে পাঠিয়ে দিয়েছিল। তবে তদন্তভার পাওয়ার পর গত ১৩ আগস্ট সিএফএসএলের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। পরদিন সিএফএসএলের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যে নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন তার ভিত্তিতেই এই রিপোর্ট। রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে কাঠের পাটাতনের উপর ওই বিছানা ছাড়া সেমিনার হলে আর কোথাও কোনও দাগ মেলেনি। বিছানায় দেহ উদ্ধারের সময় মিলে ওই চিকিৎসকের মাথা এবং পেটের কাছের কাপড় ছেঁড়া ছিল। রক্তের দাগ ছিল বলে ওই অংশের কাপড় কেটে নেওয়া হয়েছিল বলে তখন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের জানিয়েছিল সিবিআই। রিপোর্টে আততায়ীর সঙ্গে নির্যাতিতার ধস্তাধস্তিরও কোনও প্রমাণ মেলেনি।
ফরেনসিক রিপোর্ট আসার পর অনেকেই মনে করছেন অন্যত্র ধর্ষণ ও খুনের পর তাঁর দেহ হাসপাতালের সেমিনার হলে ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রিপোর্ট হাতে আসার পর সমস্ত সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখছে সিবিআই।