মৃত্যুদণ্ড নয়, আর জি কর-কাণ্ডে আমৃত্যু কারাদণ্ড সঞ্জয় রায়ের

আর জি কর মেডিক্যালে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের মামলায় আর জি কর-কাণ্ডে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলো সঞ্জয় রায়ের। এদিন সাজা ঘোষণার আগেও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে সঞ্জয়। বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ বলে দাবি করে সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তির আর্জি জানায় সিবিআই। এদিন আদালতে হাজির ছিলেন নিহত চিকিৎসকের মা-বাবা। তাঁদের বক্তব্যও শোনেন বিচারক। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণা করে আদালত।

নিহত চিকিৎসকের পরিবারকে ১৭ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ‘কর্মস্থলে চিকিৎসকের মৃত্যু, তাই রাজ্যকে আর্থিক সাহায্য দিতে হবে’ জানিয়েছেন বিচারক। নিহতের পরিবার যদিও আদালতে জানায়, ‘আমরা কোনও আর্থিক সাহায্য চাইনি’। ক্ষতিপূরণ নয়, বিচার চাই, বলে নিহত চিকিৎসকের পরিবার । তখন বিচারক বলেন, আর্থিক সাহায্যের টাকা নিয়ে কী করবেন, তা আপনাদের ব্যাপার।

বিচারক অনির্বাণ দাস সঞ্জয় রায়কে তার বক্তব্য পেশ করতে বলেন। এদিনও সঞ্জয় জানায়, সে নির্দোষ। তাকে জোর করে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।বিচারক বলেন, বক্তব্য পেশের জন্য ৩ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে সঞ্জয়কে। বিচারক স্পষ্ট জানান, সিবিআই তদন্ত, তথ্যপ্রমাণ, সাক্ষ্য, সবটাই বলছে সঞ্জয় দোষী।

আর জি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় ১৬২ দিনের মাথায় শনিবার রায় দেয় শিয়ালদা আদালত। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস জানান, সোমবার সাজা ঘোষণা করা হবে। বিচারক অনির্বাণ দাস জানিয়ে দেন, সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সর্বনিম্ন শাস্তি ২৫ বছর বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। সেই মতই সোমবার সঞ্জয় এর শাস্তি ঘোষণা করা হয় আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদন্ডের।

ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ নম্বর ধারায় ধর্ষণ, ৬৬ নম্বর ধারায় মৃত্যু হতে পারে, ধর্ষণের সময় এমন আঘাত, ও ১০৩(১) -খুনের ধারায় সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয় সঞ্জয় রায়কে।

সোমবার সকাল থেকে গোটা দেশের নজর ছিল শিয়ালদা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাসের এজলাসের দিকে। এদিনই আদালত সঞ্জয়কে জানিয়ে দেয়, CBI যা প্রমাণ দিয়েছে, তার ভিত্তিতেই আপনি দোষী সব্যস্ত। আর সেই মতই বিচারক জানিয়ে দেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এর কথা।

এতদিন ধরে যে অভয়ার মৃত্যু নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছিল সারা দেশ জুড়ে। রাতজাগা কর্মসূচী গ্রহণ করেছিল সবাই, আজ তার পরিসমাপ্তি হলো। পাঁচ মাসের মধ্যে আর জি কর কাণ্ডের তদন্ত করে দোষী সঞ্জয় এর আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো। শেষ হলো অভয়ার মৃত্যুর পর মেয়েকে হারিয়ে মা বাবার লড়াই। নতুন করে বাঁচার লড়াই চালিয়ে যেতে হবে তাঁদের।