মেডিকেল কাউন্সিলের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল শান্তনু সেন কে

santanu sen loses government position

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,


দলবিরোধী কাজের অভিযোগে আগেই সাসপেন্ড করা হয়েছিল তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেনকে। এবার তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদকে রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিল থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল। এতদিন রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলে সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে ছিলেন শান্তনু সেন। সেই পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে অন্য একজনকে বসানো হয়েছে। নতুন প্রতিনিধি করা হয়েছে অসীম সরকারকে।


আরজি কর কাণ্ডে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছিল শান্তনুকে। তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আন্দোলনেও শামিল হয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বেড়েছিল। সপ্তাহ দুয়েক আগেই ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের সঙ্গে শান্তনুকেও সাসপেন্ড করেছিল দল। সাসপেন্ড করলেও দল বিরোধী কোনও মন্তব্য করেননি তৃণমূলের চিকিৎসক ওই নেতা। বুধবার মেডিকেল কাউন্সিল থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিভিন্ন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতিতে সরকারি প্রতিনিধিদের তালিকাতেও জায়গা পাননি তিনি।


সূত্রের খবর, ডায়মন্ড হারবারের ‘সেবাশ্রয়’ কর্মসূচিতে জড়িত থাকার কারণে হয়তো শাস্তির মুখে পড়তে হলো তাকে। কারণ ওই কর্মসূচি রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পাশাপাশি একটি সমান্তরাল ব্যবস্থাগঠনের চেষ্টা বলে মনে করে প্রশাসনের একটি বড় অংশ। শান্তনু তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। অনেকেই মনে করছেন, আরজি কর কাণ্ডের পর থেকেই রাজ্যের শাসক দলের রোষে পড়েছিলেন শান্তনু। আর সেই কারণেই তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে তৃণমূল।


সূত্রের খবর, পিসি- ভাইপোর চাপা দ্বন্দ্বের কোপে পড়েই ফের পদ হারালেন শান্তনু সেন। আর জি কর কাণ্ডের জেরে এর আগে তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। আর জি কর নিয়ে মুখ খোলায় তাঁর বিরুদ্ধে দলে অসন্তোষ তৈরি হয়। তবুও অভিষেক ঘনিষ্ঠতার কারণে তাঁর ওপর কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি দলের শীর্ষ কর্তারা। শেষ পর্যন্ত দল সুপ্রীমোর সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরই তাঁকে দল থেকে নিলম্বিত করা হয়।দলের মুখপাত্রের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।দল বিরোধী কাজের অভিযোগেই দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।এই সিদ্ধান্ত জানার পর শান্তনু বলেন, কোনটা দল বিরোধী কাজ তা তিনি বুঝতে পারছেন না। দলের পক্ষ থেকেও তাঁকে অভিযোগ সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয় নি। যেমন বলা হয়নি কত দিনের জন্য তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে।


এর পরেও শান্তনু, অভিষেকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। এমনকি ডায়মন্ড হারবারে অভিষেকের সেবাশ্রয় শিবিরে শান্তনু যথেষ্ঠ সক্রিয় ছিলেন।দলের একাংশ মনে করে এই শিবিরের ফলে সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের পাশাপাশি সমান্তরাল এক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছিল। এর ফলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকেই বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছিল। এর পাশাপাশি শান্তনু, নিজের পদ ব্যবহার করে সেবাশ্রয় শিবিরে ডাক্তারদের হাজির করেছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। যদিও শান্তনু নিজে দাবি করেছেন সেবাশ্রয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া কোনও অন্যায় নয়। সূত্রের খবর দল সুপ্রীমোর ইচ্ছেতেই শান্তনু সেনকে স্রকারি পদ হারাতে হল।শ্নতনু নিজে বলেছেন, দলনেত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।