বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে শেখ হাসিনাকে পদচ্যুত করার পর থেকেই সে দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সহ সমস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরই হামলা করা হয়েছে। বাড়িঘর লুটপাট, মারধর, মহিলাদের সম্ভ্রমহানির পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের মন্দির, গির্জা বা ধর্মীয় স্থানে লাগাতার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই অবস্থায় বিশ্বের চোখে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ভাবমূর্তি একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। কট্টরপন্থী ও মৌলবাদীদের তুষ্ট করতেই সে দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না ইউনূস, এমনও অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এমতাবস্থায় সারা বিশ্বের তরফ থেকে চাপ সৃষ্টি করা হয় বাংলাদেশ সরকারের ওপর। একদিকে হাসিনার দলের চাপ অন্যদিকে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার দলও ইউনূসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করায় যথেষ্ট চাপের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তাই বাধ্য হয়ে এবার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে নড়েচড়ে বসলেন ইউনূস। সংখ্যালঘুদের ওপর যারা আক্রমণ করবে তাদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না বলে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, ধর্ম-বর্ণ-জাতি-লিঙ্গ নির্বিশেষে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে ইউনূস সরকার। সাম্প্রদায়িক হিংসার অভিযোগ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও চালু করেছে। সংখ্যালঘু নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলছে পুলিশ এবং প্রশাসন। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে কোনও অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে পুলিশ। যারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করবে বা করেছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গ্রেফতার করার কথা বলা হয়েছে তাদের।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে সাম্প্রদায়িক হামলার বিষয়ে মোট ১ হাজার ৭৬৯টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার মধ্যে পুলিশ মাত্র ৬২টি মামলা রুজু করেছে। ইতিমধ্যেই সে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন। ভারত সহ একাধিক দেশ বাংলাদেশ সরকারের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের কাছেও অভিযোগ জমা পড়েছে। এমতাবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকার বিপাকে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা ইউনূসের। আর তাই নিজেকে বাঁচাতে পুলিশকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান।