
ফের খবরের শিরোনামে মাল্লোজুলা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজি। প্রায় ১৪ বছর আগে মৃত্যু হলেও ফের উঠে এলো শীর্ষস্থানীয় এই মাওবাদী নেতার নাম। তবে সৌজন্যে এবার ভ্রাতৃবধূ। কিষেণজির ভ্রাতৃবধূ তথা সিপিআই (মাওবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ওরফে ভূপতির স্ত্রী বিমলা চন্দ সিদাম ওরফে তারাক্কা। বুধবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর সঙ্গে আরও ১০ জন অর্থাৎ মোট ১১ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করলেন। এঁরা মহারাষ্ট্রের গঢ়ছিরৌলিতে বিদর্ভ অঞ্চলের মাওবাদী নেতা-নেত্রী। তবে বিমলা ছিলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তিনি মাওবাদীদের গেরিলা বাহিনী বা পিএলজিএ (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি)-র কমান্ডার। তিনি দণ্ডকারণ্য জোনাল কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী ছিলেন।
বিমলার আত্মসমর্পণ বড় সাফল্য বলে জানিয়েছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। পুলিশের দাবি, কিষেণজির মতোই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বিমলা গত ৩৮ বছর ধরে সশস্ত্র নকশালপন্থী কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৮৩ সালে এই সংগঠন নাম লেখান। ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর ঝাড়গ্রামের বুড়িশোলের জঙ্গলে যৌথবাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হওয়ার আগে পর্যন্ত কিষেণজি এই দণ্ডকারণ্য জোনাল কমিটির নেত্রীর উপর ভীষণ ভরসা করতেন। কিষেণজির মৃত্যুর পর এরাজ্যে মাওবাদীদের অস্তিত্ব মুছে গেলেও মহারাষ্ট্রে অবশ্য তাদের সংগঠন মজবুত ছিল। বিমলা সহ ১১ জন মাওবাদীদের মাথার দাম ১ কোটি টাকা ঘোষণা করেছিল মহারাষ্ট্র সরকার। মহারাষ্ট্র পুলিশের দাবি, গঢ়ছিরৌলি-সহ বিদর্ভ এলাকায় বেশ সক্রিয় ছিলেন বিমলার নেতৃত্বে থাকা মাওবাদীরা। একাধিক নাশকতার ঘটনায় জড়িত ছিলেন বিমল সহ আত্মসমর্পণকারী ১১ জন মাওবাদী। ছত্তিশগড়েও বহু নাশকতায় জড়িত ছিলেন এই মাওবাদীরা, দাবি পুলিশের।
বুধবার ফডণবীসের কাছে গিয়ে বিমলা ছাড়াও সিপিআই মাওবাদীর গঢ়ছিরৌলি ডিভিশনের নাংশু তুমরেতি ওরফে গিরিধর এবং তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা উসেন্দি ওরফে ললিতা। ১৭০টি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত গিরিধরকে ধরতে মহারাষ্ট্র সরকার দাম রেখেছিল ২৫ লক্ষ টাকা। এই গিরিধরই মহারাষ্ট্র ও ছত্তিশগড় সরকারের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন। একের পর এক নাশকতা ঘটানোর মূল মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। অন্যদিকে বিমলার বিরুদ্ধে গঢ়ছিরৌলিতে একটি পুলিশ ফাঁড়িতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১৮ জনকে খুন করার অভিযোগ রয়েছে। এই আত্মসমর্পণের ঘটনায় মহারাষ্ট্রে মাওবাদীদের সংগঠন যে একেবারে নড়বড়ে হয়ে গেল তা বলা যায়। আত্মসমর্পণ কর্মসূচিতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ফডণবীস বলেন, ‘আমাদের রাজ্যে মাওবাদীদের শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। কোনও সাধারণ মানুষ তাদের সমর্থন করছেন না। মহারাষ্ট্র শীঘ্রই ‘মাওবাদী মুক্ত’ হবে।’