
পীযূষ চক্রবর্তী : বাংলাদেশের মৌলবাদী, জামাত ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের বদান্যতায় ওষ্ঠাগত সেদেশের সুশীল সমাজ। শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরই বাংলাদেশে নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। শাসন বলে কিছুই নেই। একদিকে যেমন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মারধর, ঘরবাড়ি লুটপাট বা ব্যবসা বন্ধ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে হিন্দু নিধন চলছে তার চেয়েও দ্রুত গতিতে। হিন্দুদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দেশ থেকে বিতাড়িত করারও প্রয়াস চালানো হচ্ছে। রেহাই দেওয়া হচ্ছে না মহিলা ও শিশুদেরও। আর এই সবই খুব দ্রুততার সঙ্গে করছে ওই ত্রয়ী। অর্থাৎ মৌলবাদী, বিএনপি এবং জামাতের সম্মিলিত আক্রমণে রীতিমতো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সেদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু এবং আওয়ামী লীগের সদস্যরা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মোহাম্মদ ইউনূসের প্রশাসনও নিধিরাম সরকারের ভূমিকা পালন করছি। তবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে আরও ভয়ংকর অভিযোগ করছেন সেদেশের বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ। বেশ কয়েকজন ব্লগার দাবি করেছেন, তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু হিন্দু এবং আওয়ামী লীগের সদস্যদের আক্রমণের বিরুদ্ধে লিখলে বা ভিডিও দেখালে কিছুদিন আগে কট্টরপন্থী বা মৌলবাদীদের রোষানলে পড়তে হতো। জামাতের সদস্যরাও তাঁদের আক্রমণ করতেন। তবে এবার খোদ পুলিশ তাঁদের বাড়িতে গিয়ে শাসিয়ে আসছে বলে অভিযোগ। পরিবারের লোকজনকে ভয় দেখানো হচ্ছে, যদি ওই বাড়ির ব্লগার কোনরকম পোস্ট করেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে পুলিশ। এমতাবস্থায় অনেকেই ভয়ে প্রতিবাদী সত্তা হারাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন কয়েকজন ব্লগার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশে এক ব্লগার বলেন, ‘দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর চরম অত্যাচার চলছে। তাঁদের ভারতে চলে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। জমি জায়গা, বাড়ি সব কম দামে বিক্রি করতে বলছে তারা। এমতাবস্থায় আমরা অনেকেই প্রতিবাদ করছিলাম। তবে পুলিশ আমাদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে।’ব্লগারদের পাশাপাশি অধ্যাপক, চিকিৎসক, আইনজীবী সকলকেই চাপে রাখছে পুলিশ। অনেকেই বলা হচ্ছে, ইসকন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মতো তাঁদেরও দেশদ্রোহিতার মামলায় গ্রেফতার করা হবে যদি তাঁরা ভাঙচুর বা পুড়িয়ে দেওয়ার পোস্ট করেন।ইতিমধ্যেই দেশদ্রোহিতার মামলায় জেলবন্দি সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ বলেছেন, বাংলাদেশে আইন বলে কিছুই নেই। এবার সেই একই ভাষা বলছেন সেদেশের ব্লগার থেকে শুরু করে প্রতিবাদী কন্ঠের একটা বড় অংশ।