ওড়িশায় নিগৃহীত পরিযায়ী বাংলার শ্রমিকরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি সাংসদের

Published By Subrata Halder on 02 May 2025 at 04:51 pm

বঙ্গবার্তা ব্যুরো,
ওড়িশায় কাজ করতে যাওয়া বাংলার শ্রমিকদের পরিকল্পিত ভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে মুর্শিদাবাদ সহ যে সকল সংখ্যালঘু পরিয়ায়ী শ্রমিকরা বিজেপি শাসিত রাজ্য ওড়িশায় কাজ করতে যাচ্ছেন তাদের উপর ধারাবাহিক হামলার অভিযোগ তুললেন তৃনমূল সাংসদ ইউসুফ পাঠান। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন ইউসুফ। বিজেপি শাসিত রাজ্যে কর্মরত পশ্চিমবঙ্গের বহু শ্রমিককে টার্গেট করে আক্রমণ করা হয়েছে ও তাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে বলে দাবি করেছে। শুক্রবার প্রকাশ্যে আসা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা এই চিঠিতে চার দফা অভিযোগ তুলে তার হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ।
২৭ শে এপ্রিল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠানো দুই পাতার চিঠিতে ইউসুফ লিখেছেন, ওড়িশায় যে ধরনের সংগঠিত হামলা পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর চালানো হচ্ছে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। বহু শ্রমিক মারধরের শিকার হচ্ছেন, মোবাইল ফোন ও উপার্জনের টাকা লুঠ হচ্ছে, আধার কার্ড নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে, এমনকি অনেককে ঘরছাড়া করে দেওয়া হচ্ছে, থাকার জায়গা পাচ্ছেন না তারা।
চিঠিতে ইউসুফ লিখেছেন মুর্শিদাবাদ, বিশেষ করে বহরমপুর থেকে যাওয়া বহু শ্রমিক প্রাণভয়ে কাজ ছেড়ে ফেরত আসতে বাধ্য হয়েছেন। সাংসদের অভিযোগ, গত বছর আগস্ট, সেপ্টেম্বর মাসেও একই ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছিল, কিন্তু প্রশাসনিক স্তরে কোনও দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
এই ঘটনার সঙ্গে ধর্মীয় ও আঞ্চলিক পরিচয়ের ভিত্তিতে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টাও চলছে বলে ইঙ্গিত অভিযোগ ইউসুফের। তার বক্তব্য, এই ধরনের হামলা ভারতের সংবিধানের একতা, অখণ্ডতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের পরিপন্থী। এটা নিছক আইনশৃঙ্খলার বিষয় নয়, এটা মানুষের মর্যাদা ও দেশের নাগরিক হিসেবে কাজ করার অধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্ন।
বাংলায় যে কোন ঘটনা ঘটলে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং করার জন্য প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়। এই অবস্থায় সাংসদ তার চিঠিতে চার দফা দাবি করেছেন তা হল ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ওড়িশা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া, আক্রান্ত শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল পাঠিয়ে ঘটনার উৎস ও মাত্রা খতিয়ে দেখা এবং পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসা শ্রমিকদের জন্য যথোপযুক্ত সাহায্য ও পুনর্বাসন ব্যবস্থা গ্রহণ।
তিনি অভিযোগ করেন, ওড়িশায় নতুন করে বিজেপি সরকার গঠনের পরেই এই হামলার পরিমাণ বেড়েছে বলে তার সন্দেহ। তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, শ্রমিকরা রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে যেখানে খুশি কাজ করতে পারেন, এটাই আমাদের ফেডারেল কাঠামোর ভিত্তি। সেখানে যদি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও আঞ্চলিক বিদ্বেষ ছড়িয়ে তাদের জীবন-জীবিকা বিপন্ন হয়, তবে সেটা গোটা দেশের পক্ষে উদ্বেগজনক বার্তা। প্রসঙ্গত গতবছর এ ধরনের ঘটনা ঘটেছিল ওড়িশায়।
তবে ২৭ এপ্রিলের চিঠির কোনও প্রতিক্রিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এখনো আসেনি।